পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধর্ম vථ8? তো কিছুই বিল্পিষ্ট হইয়া ৰাইতেছে না, জগৎ জুড়িয়া তো হাছাকারধ্বনি উঠিতেছে না, মহাকাশতলে বিশ্বের আরামেরই নিশ্বাস পড়িতেছে। দিবস আমাদের জীবনেরই প্রতিকৃতি বটে। দিনের আলোক যেমন আর-সমস্ত লোককে আবৃত করিয়া আমাদের কর্মস্থান এই পৃথিবীকেই একমাত্র জজিল্যমান করিয়া তুলে, আমাদের জীবনও আমাদের চতুর্দিকে তেমনি একটি বেষ্টন রচনা করে,-- সেইজন্যই আমাদের জীবনের অন্তর্গত যাহা-কিছু, তাহাই আমাদের কাছে এত একান্ত, ইহার চেয়ে বড়ো যে আর-কিছু অাছে, তাহা সহসা আমাদের মনেই হয় না। দিনের বেলাতেও তো আকাশ ভরিয়া জ্যোতিক্ষলোক বিরাজ করিতেছে, কিন্তু দেখিতে পাই কই ? যে আলোক আমাদের কর্মস্থানের ভিতরে জলিতেছে, সেই আলোকই বাহিরের অন্ত-সমস্তকে দ্বিগুণতর অন্ধকারময় করিয়া রাখে। তেমনি • আমাদের এই জীবনকে চতুর্দিকে বেষ্টন করিয়া শতসহস্ৰ জ্যোতির্ময় বিচিত্ররহস্ত নানা আকারে বিরাজ করিতেছে, কিন্তু আমরা দেখিতে পাই কই ? যে চেতনা ষে বুদ্ধি যে ইন্দ্রিয়শক্তি আমাদের জীবনের পথকে উজ্জ্বল করে, আমাদের কর্মসাধনেরই পরিধিসীমার মধ্যে আমাদের মনোযোগকে প্রবল করিয়া তোলে, সেই জ্যোতিই আমাদের জীবনের বহিঃসীমার সমস্তই আমাদের নিকট অগোচর রাখিয়া দেয়। জীবনে যখন আমরাই কর্তা, যখন সংসারই সর্বপ্রধান, যখন আমাদের সুখদুঃখচক্রের পরিধি আমাদের আয়ুকালের মধ্যেই বিশেষভাবে পরিচ্ছিন্ন বলিয়া প্রতিভাত হইতে থাকে, এমন সময় দিন অবসান হইয়া যায়, জীবনের স্বর্য অস্তাচলের অন্তরালে গিয়া পড়ে, মৃত্যু আমাদিগকে অঞ্চলে আচ্ছন্ন করিয়া কোলে তুলিয়া লয় । তখন সেই-ষে অন্ধকারের আবরণ, সে কি কেবলই অভাব, কেবলই শূন্তত ? আমাদের কাছে কি তাহার একটি সুগভীর ও সুবিপুল প্রকাশ নাই ? আমাদের জীবনাকাশের অন্তরালে ষে অসীমত নিত্যকাল বিরাজ করিতেছে, মৃত্যুর তিমিরপটে তাহ কি দেখিতে দেখিতে আমাদের চতুর্দিকে আবিষ্কৃত হইয়া পড়ে না ? তখন কি সহসা আমাদের এই সীমাবচ্ছিন্ন জীবনকে অসংখ্য জীবনলোকের সস্থিত যুক্ত করিয়া দেখিতে পাই না ? দিবসের বিচ্ছিন্ন পৃথিবীকে সন্ধ্যাকাশে যখন সমস্ত গ্রহদলের সঙ্গে নক্ষত্রমণ্ডলীর মধ্যে সংযুক্ত করিয়া জানিতে পারি, তখন সমস্তটির যেমন একটি বৃহং ছন্দ একটি প্রকাও তাৎপর্ব আমাদের চিত্তের মধ্যে প্রসারিত হইয় উঠে, তেমনি মৃত্যুর পরে বিশ্বের সহিত যোগযুক্ত আমাদের জীবনের বিপুল তাৎপর্ব কি আমাদের কাছে অতি সহজেই প্রকাশিত হয় না ? জীবিতকালে বাহাকে আমরা একক করিয়া পৃথক করিয়া দেখি, মৃত্যুর পরে তাহাকেই আমরা বিরাটের মধ্যে সম্পূর্ণ করিয়া দেধিবার অবকাশ পাই । আমাদের জীবনের চেষ্টা আমাদের 88 پسNoلإ