পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Վ)(Ե, রবীন্দ্র-রচনাবলী বিদ্বেষ-বাধাবিপত্তির প্রাচুর্ভাব হয়, আর, আলোক পাইবার মতে চেষ্টা করিলে সমুন্ত সহজ সরল হুইয়া যায়। আমরা জানি বা না জানি, ব্রহ্মের সহিত আমাদের ৰে নিত্য সম্বন্ধ আছে, সেই সম্বন্ধের মধ্যে নিজের চিত্তকে উদ্বোধিত করিয়া তোলাই ব্ৰহ্মপ্রাপ্তির সাধনা । o go ভারতবর্ষে এই উদ্বোধনের যে মন্ত্র আছে, তাহাও অত্যন্ত সরল। তাহা একনিশ্বাসেই উচ্চারিত হয়—তাহা গায়ত্রীমন্ত্র। ওঁ ভূভূবঃ স্ব;–গায়ত্রীর এই অংশটুকুর নাম ব্যাহতি । ব্যাহৃতিশব্দের অর্থ—চারিদিক হইতে আহরণ করিয়া আনা । প্রথমত ভূলোকভুবলোক-স্বলোক অর্থাৎ সমস্ত বিশ্বজগৎকে মনের মধ্যে আহরণ করিয়া আনিতে হয়—মনে করিতে হয়, আমি বিশ্বভুবনের অধিবাসী-আমি কোনো বিশেষ-প্রদেশবাসী নহি—আমি যে রাজ-অট্টালিকার মধ্যে বাসস্থান পাইয়াছি, লোকলোকাস্তর তাহার এক-একটি কক্ষ। এইরূপে, যিনি যথার্থ আর্ষ,তিনি অন্তত প্রত্যহ একবার চন্দ্ৰস্থৰ গ্ৰহতারকার মাঝখানে নিজেকে দণ্ডায়মান করেন, পৃথিবীকে অতিক্রম করিয়া নিখিল জগতের সহিত আপনার চিরসম্বন্ধ একবার উপলব্ধি করিয়া লন- স্বাস্থ্যকামী যেরূপ রুদ্ধগৃহ ছাড়িয়া প্রত্যুষে একবার উন্মুক্ত মাঠের বায়ু সেবন করিয়া আসেন, সেইরূপ আর্য সাধু দিনের মধ্যে একবার নিধিলের মধ্যে, ভূভূব-স্বলোকের মধ্যে নিজের চিত্তকে প্রেরণ করেন । তিনি সেই অগণাজ্যোতিষ্কখচিত বিশ্বলোকের মাঝখানে দাড়াইয়া কী মন্ত্র উচ্চারণ করেন— তৎসবিতুৰ্বরেণ্যং ভর্গে দেবস্ত ধীমহি । এই বিশ্বপ্রসবিতা দেবতার বরণীয় শক্তি ধ্যান করি। এই বিশ্বলোকের মধ্যে সেই বিশ্বলোকেশ্বরের যে শক্তি প্রত্যক্ষ, তাহাকেই ধ্যান করি । একবার উপলব্ধি করি বিপুল বিশ্বজগৎ একসঙ্গে এই মুহূর্তে এবং প্রতিমুহূর্তেই তাহ হইতে অবিশ্রাম বিকীর্ণ হইতেছে । আমরা যাহাকে দেখিয়া শেষ করিতে পারি না, জানিয়া অস্ত করিতে পারি না, তাহ সমগ্রভাবে নিয়তই তিনি প্রেরণ করিতেছেন। এই বিশ্বপ্রকাশক অসীম শক্তির সহিত আমার অব্যবহিত সম্পর্ক কী স্থত্রে ? কোন সূত্র অবলম্বন করিয়া তাহাকে ধ্যান করিব ? খিয়ে বেী সঃ প্রচোদরাৎ— যিনি আমাদিগকে বুদ্ধিবৃত্তিসকল প্রেরণ করিতেছেন, তাহার প্রেরিত সেই ধীস্থত্রেই র্তাহাকে ধ্যান করিব । স্বর্যের প্রকাশ আমরা প্রত্যক্ষভাবে কিসের দ্বারা জানি ? স্থৰ নিজে আমাদিগকে যে কিরণ প্রেরণ করিতেছেন, সেই কিরণেরই দ্বারা । সেইরূপ বিশ্বজগতের সবিতা আমাদের মধ্যে অহরহ যে ধীশক্তি প্রেরণ করিতেছেন—ষে শক্তি