পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতক। মেয়ের নীরব মুখে কৗ দেখে মা, শেল বাজে তার বুকে । না-বলা কোন গোপন কথার মায়া মঞ্জুলিকার কালো চোথে ঘনিয়ে তোলে জলভরা এক ছায়া অশ্র-ভেজা গভীর প্রাণের ব্যথা এনে দিল অধরে তার শরংনিশির স্তন্ধ ব্যাকুলত । মায়ের মুখে অল্প রোচে নাকো— কেঁদে বলে, “হায় ভগবান, অভাগীরে ফেলে কোথায় থাক । একদা বাপ দুপুরবেলায় ভোজন সাঙ্গ করে গুড়গুড়িটার নলটা মুখে ধরে, ঘুমের আগে, যেমন চিরাভ্যাস, পড়তেছিলেন ইংরেজি এক প্রেমের উপন্যাস । মা বললেন, বাতাস করে গায়ে, কখনো বা হাত বুলিয়ে পায়ে, “যার খুশি সে নিন্দে করুক, মরুক বিষে জরে আমি কিন্তু পারি যেমন করে মঞ্জুলিকার দেবই দেব বিয়ে ।” বাপ বললেন, কঠিন হেসে, “তোমরা মায়ে ঝিয়ে এক লগ্নেই বিয়ে ক’রে আমার মরার পরে, সেই কটা দিন থাকো ধৈর্ষ ধরে ।” এই বলে তার গুড়গুড়িতে দিলেন মৃদু টান । মা বললেন, “উঃ কী পাষাণ প্রাণ, স্নেহমায়া কিছু কি নেই ঘটে ।” বাপ বললেন, “আমি পাষাণ বটে। ধর্মের পথ কঠিন বড়ো, ননির পুতুল হলে এতদিনে কেঁদেই যেতেম গলে ।” శిఏ