পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ای ধম ○bA○ উপাসনা, কেবল ভাবের উপাসনা, – সেই উপাসনাদ্বারা আমরা ক্ষণে ক্ষণে ব্রহ্মকে স্পর্শ করিতে পারি, কিন্তু ব্ৰহ্মকে লাভ করিতে পারি না । এ-কথা সকলেই জানেন, অনেক সময়ে মানুষ যাহাকে উপায়রূপে আশ্রয় করে, তাহাকেই উদ্দেপ্তরূপে বরণ করিয়া লয়, যাহাকে রাজ্যলাভের সহায়মাত্র বলিয়া ভাকিয়া লয়, সেই রাজসিংহাসন অধিকার করিয়া বসে। আমাদের ধর্মসমাজরচনাতেও সে বিপদ আছে। আমরা ধর্মলাভের জন্ত ধৰ্মসমাজ স্থাপন করি, শেষকালে ধর্মসমাজই ধর্মের স্থান অধিকার করে । আমাদের নিজের চেষ্টারচিত সামগ্ৰী আমাদের সমস্ত মমতা ক্রমে এমন করিয়া নিঃশেষে আকর্ষণ করিয়া লয় যে, ধর্ম, যাহা আমাদের স্বরচিত নহে, তাহা ইহার পশ্চাতে পড়িয়া যায়। তখন, আমাদের সমাজের বাহিরে ষে আর-কোথাও ধর্মের স্থান থাকিতে পারে, সে-কথা স্বীকার করিতে কষ্টবোধ হয় । ইহা হইতে ধর্মের বৈষয়িকতা আসিয়া পড়ে। দেশপুৰুগণ যে-ভাবে দেশ জয় করিতে বাহির হয়, আমরা সেই ভাবেই ধৰ্মসমাজের ধ্বজ লইয়া বাহির হই। অন্যান্য দলের সহিত তুলনা করিয়া আমাদের দলের লোকবল, অর্থবল, আমাদের দলের মন্দিরসংখ্যা গণনা করিতে থাকি । মঙ্গলকর্মে মঙ্গলসাধনের আ ন নদ অপেক্ষা মঙ্গলসাধনের প্রতি দ্ব দ্বি তা বড়ো হইয়া উঠে। দলাদলির আগুন কিছুতেই নেবে না, কেবলই বাড়িয়া চলিতে থাকে। আমাদের এখনকার প্রধান কর্তব্য এই যে, ধর্মকে যেন আমরা ধর্মসমাজের হস্তে পীড়িত হইতে না দিই। ব্ৰহ্ম ধন্য—তিনি সর্বদেশে, সর্বকালে, সর্বজীবে ধন্য—তিনি কোনো দলের নহেন, কোনো সমাজের নহেন, কোনো বিশেষ ধর্মপ্রণালীর নহেন, তাহাকে লইয়া ধর্মের বিষয়কর্ম ফাজিয়া বসা চলে না । ব্রহ্মচারী শিস্য জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন—“স ভগব; কস্মিন প্রতিষ্ঠিত ইতি”–“হে ভগবন, তিনি কোথায় প্রতিষ্ঠিত আছেন?” ব্ৰহ্মবাদী গুরু উত্তর করিলেন—“স্বে মহিম্নি"—“আপন মহিমাতে।” তাহারই সেই মহিমার মধ্যে র্তাহার প্রতিষ্ঠা অনুভব করিতে হইবে-আ মা দে র রচনার মধ্যে নহে। '\లి} e