পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতক আপন মনে বসে থাকে । আকাশ যেন শুধায় তাকে— যার কথা সে ভাবে কী তার নাম । আমি তারে যখন শুধালাম — “মালার আশায় যাও বুঝি ঐ হাতে নিয়ে শূন্ত তোমার ডালা ?” সে বলে, “ভাই, চাই নে বিজয়মালা !” তারে দেখে সবাই হাসে ; মনে ভাবে, “এও কেন মোদের সাথে আসে আশা করার ভরসাও যার নাইকে মনে, আগে হতেই হার মেনে যে চলে রণে ।” সবার তরে জায়গা সে দেয় মেলে, আগেভাগে যাবার লাগি ছুটে যায় না আর-সবারে ঠেলে । কিন্তু নিত্য সজাগ থাকে ; পথ চলেছে যেন রে কার বঁশির অধীর ডাকে হাতে নিয়ে রিক্ত আপন থালা ; তবু বলে, চায় না বিজয়মালা । সিংহাসনে একলা ব’সে রানী মৃতিমতী বাণী । ঝংকারিয়া গুঞ্জরিয়া সভার মাঝে অামার বীণা বাজে । কখনো বা দীপক রাগে চমক লাগে, তারা বৃষ্টি করে ; কখনো বা মল্লারে তার অক্রধারার পাগল-ঝোরা ঝরে । আর সকলে গান শুনিয়ে নতশিরে সন্ধ্যাবেলার অন্ধকারে ধীরে ধীরে গেছে ঘরে ফিরে ।