পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 సెby 唱 রবীন্দ্র-রচনাৰলী পেত। বিলুপ্তিকে ষে মানুষ সর্বাত্তাকরণে ভয় করে তার প্রমাণ-প্রয়োগের কোনে দরকার নেই। কিছু একটা গেল এ-কথার স্মরণ তার মুখের স্মরণ নয়। এই আশঙ্ক এবং এই স্মরণের সঙ্গেই তার জীবনের গভীর বিষাদ জড়িত—সে ধরে রাখতে চায় অথচ ধরে রাখতে পারে না। মানুষ সর্বাস্তাকরণে যদি কিছুকে না চায় তো লে বিলয়কে। তাই যদি হল তবে যে অসামঞ্জস্ত যে বিচ্ছেদের উপর তার স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠিত, সেইটেকে কি সে চায় ? তাও তো চায় না। এই বিচ্ছেদ এই অসামঞ্জস্তের জন্তেই তো সে চিরদিন কেঁদে মরছে। তার যত পাপ যত তাপ সে তো একেই আশ্রয় করে। এইজন্তেই তো সে গান গেয়ে উঠছে—হরি আমায় বিনামূল্যে পার করে । কিন্তু পারে যাওয়া যদি লুপ্ত হওয়াই হল তবে তো আমরা মুশকিলেই পড়েছি। তবে তে এপারে দুঃখ আর ওপারে ফাকি । § আমরা কিন্তু দুঃখকেও চাই নে ফাকিকেও চাই নে। তবে আমরা কী চাই, আর সেটা পাবই বা কী করে। আমরা প্রেমকেই চাই। কখন সেই প্রেমকে পাই ? যখন বিচ্ছেদ-মিলনের সামঞ্জস্ত ঘটে ; যখন বিচ্ছেদ মিলনকে নাশ করে না এবং মিলনও বিচ্ছেদকে গ্রাস করে না—দুই যখন একসঙ্গে থাকে, অথচ তাদের মধ্যে আর বিরোধ থাকে না—তারা পরম্পরের সহায় হয় । এই ভেদ ও ঐক্যের সামঞ্জস্তের জন্যেই আমাদের সমস্ত আকাঙ্ক্ষা । আমরা এর কোনোটাকেই ছাড়তে চাই নে। আমাদের যা কিছু প্রয়াস বা কিছু স্বটি সে কেবল এই ভেদ ও অভেদের অবিরুদ্ধ ঐক্যের মূর্তি দেখবার জন্তেই—দুইয়ের মধ্যেই এককে লাভ করবার জন্তে । আমাদের প্রেমের ভগবান যখন আমাদের পার করবেন তখন তিনি আমাদের চিরদুঃখের ৰিচ্ছেদকেই চিরন্তন আনন্দের বিচ্ছেদ করে তুলবেন । তখন তিনি আমাদের এই বিচ্ছেদের পাত্র ভরেই মিলনের ক্ষুধা পান করাবেন। তখনই বুঝিয়ে দেবেন বিচ্ছেদটি কী অমূল্য রত্ন । ৮ পৌষ