পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ রবীন্দ্র-রচনাবলী বন্দী থাকে নিবিড় প্রেমের গ্রন্থি দিয়ে । তাই তো যখন শেষে একে একে আপন জনে স্বৰ্ষ-আলোর অন্তরালের দেশে আঁখির নাগাল এড়িয়ে পালায়, তখন রিক্ত শুষ্ক জীবন মম শীর্ণ রেখায় মিলিয়ে আসে বর্ষাশেষের নিবরিণীসম শূন্য বালুর একটি প্রান্তে ক্লান্ত সলিল স্রস্ত অবহেলায় । তাই যারা আজ রইল পাশে এই জীবনের সূর্য-ডোবার বেলায় তাদের হাতে হাত দিয়ে তুই গান গেয়ে নে থাকতে দিনের আলো— ব’লে নে ভাই, এই যে দেখা এই যে ছোওয়া, এই ভালো এই ভালো । এই ভালো আজ এ সংগমে কান্নাহাসির গঙ্গাযুমুনায় ঢেউ খেয়েছি, ডুব দিয়েছি, ঘট ভরেছি, নিয়েছি বিদায় । এই ভালো রে ফুলের সঙ্গে আলোয় জাগা, গান গাওয়া এই ভাসায় ; তারার সাথে নিশীথ রাতে ঘুমিয়ে-পড়া নূতন প্রাণের আশায় । শেষ প্রতিষ্ঠা এই কথা সদ! শুনি, “গেছে চলে”, “গেছে চলে ।” তবু রাখি ব’লে ব’লে না, “সে নাই ।” সে-কথাটা মিথ্যা, তাই কিছুতেই সহে না যে, মর্মে গিয়ে লাজে । মাহুষের কাছে যাওয়া-আসা ভাগ হয়ে আছে । তাই তার ভাসা বহে শুধু আধপান আশ । আমি চাই সেইখানে মিলাইতে প্রাণ যে-সমুদ্রে আছে নাই পুর্ণ হয়ে রয়েছে সমান ।