পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীবশিগাথা S\9\9 করে ঝর কার ভাদরী-বদর, বিরহকাতর শর্বরী । ফিরিছে। এ কোন অসীম রোদন কানন কানন মর্মরি। আমার প্রাণের রাগিণী আজি এ গগনে গগনে উঠিল বাজিয়ে । হৃদয় এ কী রে ব্যাপিল তিমিরে সমীরে সমীরে সঞ্চারি । রাজা । কী বল হে, কী মনে হচ্ছে তোমার । সভাকবি । সত্য কথা বলি, মহারাজ । অনেক কবিত্ব করেছি, অমরুশতক পেরিয়ে শান্তিশতকে পৌছবার বয়স হয়ে এল- কিন্তু এই যে ঐরা অশরীরী বিরহের কথা বলেন যা নিরবলম্ব, এটা কেমন যেন প্রেতলোকের ব্যাপার বলে মনে হয় । রাজা । শুনলে তো, নটরাজ ! একটু মিলনের আভাস লাগাও, অন্তত দূর থেকে আশা পাওয়া যায় এমন আয়োজন করতে দোষ কী । সভাকবি । ঠিক বলেছেন, মহারাজ । পাত পেড়ে বসলে ওঁদের মতে যদি কবিত্ববিরুদ্ধ হয়, অন্তত রান্নাঘর থেকে গন্ধটা বাতাসে মেলে দিতে দোষ কী । নটরাজ। বরামপি বিরহাে ন সঙ্গমস্তস্যা। পেটভরা মিলনে সুর চাপা পড়ে, একটু ক্ষুধা বাকি রাখা চাই, কবিরাজরা এমন কথা বলে থাকেন । আচ্ছা, তবে মিলনতরীর সারিগান বিরহ বন্যার ও পার থেকে আসুক সজল হাওয়ায় । ধরণীর গগনের মিলনের ছন্দে বাদল-বাতাস মাতে মালতীর গন্ধে । উৎসবসভা-মাঝে শ্রাবণের বীণা বাজে, শিহরে শ্যামল মাটি প্ৰাণের আনন্দে । मृ३ कूज आढूनिशा अशैज्ञ विख्क्र নাচন উঠিল জেগে নদীর তরঙ্গে । কঁপিছে বনের হিয়া বরষনে মুখরিয়া, বিজলি বলিয়া উঠে নবঘনমন্দ্ৰে । রাজা । এ গানটাতে একটু উৎসাহ আছে। দেখছি, তোমার মৃদঙ্গওয়ালার হাত দুটাে অস্থির হয়ে উঠেছে- ওকে একটু কাজ দাও । । নটরাজ। এবার তা হলে একটা অশ্রুত গীতচ্ছদের মূর্তি দেখা যাক । সভাকবি । শুনলেন ভাষাটা ! অশ্রুত গীত। নিরন্ন ভোজের আয়োজন ! রাজা । দোষ দিয়ে না, যাদের যেমন রীতি। তোমাদের নিমন্ত্রণে আমিষের প্রাচুর্য। সভাকবি । আজ্ঞা হা মহারাজ, আমরা আধুনিক, আমিষলোলুপ। নটরাজ । শ্যামলিয়া, দেহভঙ্গির নিঃশব্দ গানের জন্যে অপেক্ষা করছি। রাজা । অতি উত্তম। শূন্যকে পূর্ণ করেছি। তুমি । এই নাও পুরস্কার। নটরাজ, তোমাদের পালাগানে একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছি, এতে বিরহের অংশটাই যেন বেশি। তাতে ওজন ঠিক থাকে না। নটরাজ। মহারাজ, রসের ওজন আয়তনে নয়, সমস্ত গাছ এক দিকে, একটিমাত্র ফুল এক দিকে- তাতেও ওজন থাকে। অসীম অন্ধকার এক দিকে, একটি তারা এক দিকে- তাতেও