পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 রবীন্দ্র-রচনাবলী কোরো না, কিন্তু ভাবনা করছি মনে করে ভালো লাগে। তবু বলে রাখি এডিনের তাতে পোড়া আমার অভ্যোস আছে। জানি তুমি এই বলে রাগ করবে যে, কোন পাথেয় দাবি করিনি তোমার কাছ থেকে। একমাত্র কারণ এই যে, আমি যে আর্টিস্ট এ পরিচয়ে তোমার একটুও শ্রদ্ধা নেই। এ আমার চিরদুঃখের কথা ; কিন্তু এজন্যে তোমাকে দোষ দেব না। আমি নিশ্চয়ই জানি, একদিন সেই রসজ্ঞ দেশের গুণী লোকেরা আমাকে স্বীকার করে নেবে যাদের স্বীকৃতির খাটি মূল্য আছে। অনেক মূঢ় আমার ছবির অন্যায় প্রশংসা করেছে। আবার অনেক মিথুক করেছে ছলনা। ভূমি আমার মন ড্রোলানোর জন্যে কোনোদিন কৃত্রিম তব কর নি। যদিও তোমার জানা ছিল, তোমার একটুখানি প্রশংসা আমার পক্ষে অমৃত । তোমার চরিত্রেয় অটল সত্য থেকে আমি অপরিমেয় দুঃখ পেয়েছি, তবু সেই সত্যকে দিয়েছি। আমি বড়ো মূল্য। একদিন বিশ্বের কাছে যখন সন্মান পাব, তখন সব চেয়ে সত্য সন্মান আমাকে তুমিই দেবে, তার সঙ্গে হৃদয়ের সুধা মিশিয়ে । যতক্ষণ তোমার বিশ্বাস মািৰ প্টেম্বর ততক্ষণ দুৰি অপেক্ষা করে। এ কথা মেন রেখে আজকাবাসাকার se এতক্ষণে জানতে পেরেছ তোমার হারখানি গেছে। চুরি । এ হার তুমি বাজারে বিক্রি করতে যােচ্ছ, এই ভাবনা আমি কিছুতেই সহ্য করতে পারছিলুম না। তুমি পাজার ভেঙে সিদ্ধ কাটতে যাজিলে আমার বুকের মধ্যে । তোমার ঐ হারের বদলে আমার একতাড়া ছবি তোমার গয়নার বাক্সের কাছে রেখে এসেছি । মনে মনে হেসো না । বাংলাদেশের কোথাও এই ছবিগুলো ছেড়া কাগজের বেশি দর পাবে না। অপেক্ষা কোরো বী, আমার মধুকরী, তুমি ঠিকমবে না, কখনোই না । হঠাৎ যেমন কোদালের মুখে গুপ্তধন বেরিয়ে পড়ে, আমি জাক করে বলছি, তেমনি আমার ছবিগুলির দুর্মুল্য দীপ্তি হঠাৎ বেরিয়ে পড়বে। তার আগে পর্যন্ত হেসো, কেননা সব মেয়ের কাছেই সব পুরুষ ছেলেমানুষ- যাদের তারা ভালোবাসে । তোমার সেই জিন্তু কৌতুকের হাসি আমার কল্পনায় ভরতি করে নিয়ে চললুম সমুদ্রের পারে। আর নিলুম তোমার সেই মধুময় ঘর থেকে একখানি মধুময় অপবাদ । দেখেছি তোমার ভগবানের কাছে তুমি কত দরবার নিয়ে প্রার্থনা করে, এবার থেকে এই প্রার্থনা কোরো, তোমার কাছ থেকে চলে আসার দারুণ দুঃখ যেন একদিন সার্থক হয়। তুমি মনে মনে কখনো আমাকে ঈর্ষা করেছি। কিনা জানি নে । এ কথা সত্য, মেয়েদের আমি ভালোবাসি। ঠিক ততটা না হোক, মেয়েদের আমার ভালো লাগে । তারা আমাকে ভালোবেসেছে, সেই ভালোবাসা আমাকে কৃতজ করে। কিন্তু নিশ্চয় তুমি জান যে, তারা নীহারিকামণ্ডলী, তার মাঝখানে তুমি একটিমাত্র ধ্রুবনক্ষত্র । তারা আভাস, তুমি সত্য । এ-সব কথা শোনাবে সেন্টিমেন্টাল । উপায় নেই, আমি কবি নই। আমার ভাষাটা কলার ভেলার মতো, দুেউ লাগলেই বাড়াবাড়ি করে দোলা দিয়ে । জানি বেদনার যেখানে গভীরতা সেখানে গভীর হওয়া চাই, নইলে সত্যের মর্যাদা থাকে না। দুর্বলতা চঞ্চল, অনেকবার আমার দুর্বলতা দেখে হেসেছি। এই চিঠিতে তারই লক্ষণ দেখে একটু হেসে তুমি বলবে, এই তো ঠিক তোমার অভীর মতোই ভাবখানা। কিন্তু এবার হয়তো তোমার মুখে হাসি আসবে না । তোমাকে পাইনি বলে অনেক খুঁতখুঁত করেছি, কিন্তু হৃদয়ের দানে তুমি যে কৃপণ, এ কথার মতো এতবড়ো অবিচার আর কিছু হতে পারে না। আসলে এ জীবনে তোমার কাছে আমার সম্পূর্ণ প্ৰকাশ হতে পারল না। হয়তো কখনো হতে পারবে না। এই তীব্ৰ অতৃপ্তি আমাকে এমন কাণ্ডাল করে রেখেছে। সেইজন্যেই আর কিছু বিশ্বাস করি বা না করি, হয়তো জন্মভাৱে বিশ্বাস করতে হবে । তুমি স্পষ্ট করে আমাকে তোমার ভালোবাসা জানাও নি। কিন্তু তোমার অন্ধতার গভীর থেকে প্রতিক্ষণে যা ভূমি দান করেছি, নতিক তাকে কোনো সংজ্ঞা দিতে পারে নি- বলেছে, অলৌকিক । MBSBB BBBBBLLLLLL LBB BBBLLL BDBLL KBL OE MLKL YYBBD BBBBB ঠিক জানি নে । হয়তো সবই বানানো কথা । কিন্তু হৃদয়ের একটা গোপন জায়গা আছে আমাদের নিজেরই অগোচরে, সেখানে প্ৰবল ঘা লািগলে কথা। আপনি বানিয়ে বানিয়ে ওঠে, হয়তো সে এমন কোনো সত্য যা এতদিনে নিজে জানতে পারি নি ।