পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○br রবীন্দ্র-রচনাবলী আমি জিজ্ঞাসা করলুম, “আপনি হলে আমাকে প্রথম কথাটা কী বলতেন।” “বলতুম, রাস্তায় ঘাটে ঢেলা কুড়িয়ে কুড়িয়ে করছেন কী । আপনার কি বয়স হয় নি।” “दाब्लका नेि एकका ।” “ভয় করেছিল ।” “আমাকে ভয় কিসের ?” “আপনি যে মন্ত লোক, দাদুর কাছে শুনেছি। তিনি আপনার লেখা প্ৰবন্ধ বিলিতি কাগজে পড়েছেন । তিনি যা পড়েন। আমাকে শোনাতে চেষ্টা করেন।” “এটাও কি করেছিলেন ।” “নিষ্ঠুর তিনি, করেছিলেন। লাটিন শব্দের ভিড় দেখে জোড়হাত করে তঁাকে বলেছিলুম, দাদু এটা থােক। বরঞ্চ তোমার সেই কোয়ান্টম থিয়োরির বইখানা খোলো।” “সে থিয়োরিটা বুঝি আপনার জানা আছে ?” “কিছুমাত্র না। কিন্তু দাদুর দৃঢ় বিশ্বাস সবাই সব কিছু বুঝতে পারে। আর তার অদ্ভুত এই একটা ধারণা যে, মেয়েদের বৃদ্ধি পুরুষদের বুদ্ধির চেয়ে বেশি তীক্ষ। তাই ভয়ে ভয়ে আছি অবিলম্বে আমাকে টাইম-স্পেস’-এর জোড়ামিলনের ব্যাখ্যা শুনতে হবে । দিদিমা যখন বেঁচে ছিলেন, দাদু বড়ো ತೌ তিনি মুখ বন্ধ করে দিতেন ; এটাই যে মেয়েদের বুদ্ধির প্রমাণ, দাদু কিন্তু সেটা gigan o " অচিরার দুই চোখ স্নেহে আর কৌতুকে ছলছল জ্বলজ্বল করে উঠল। দিনের আলো নিঃশেষ হয়ে এল । সন্ধ্যার প্রথম তারা জ্বলে উঠেছে একটা একলা তালগাছের মাথার উপরে । সঁওতাল মেয়েরা ঘরে চলেছে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে, দূর থেকে শোনা যাচ্ছে তাদের গান । এমন সময়ে বাইরে থেকে ডাক এল, “কোথায় তুমি । অন্ধকার হয়ে এল যে ! আজিকাল সময় We at ” অচিরা উত্তর দিল, “সে তো দেখতেই পাচ্ছি। তাই জন্যে একজন ভলণ্টিয়ার নিযুক্ত করেছি।” আমি অধ্যাপকের পায়ের ধুলো নিয়ে প্ৰণাম করলুম। তিনি শশব্যস্ত হয়ে উঠলেন । আমি পরিচয় দিলুম, “আমার নাম শ্ৰীনবীনামাধব সেনগুপ্ত।” বৃদ্ধের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বললেন, “বলেন কি ! আপনিই ডাক্তার সেনগুপ্ত ? কিন্তু আপনাকে যে বড়ো ছেলেমানুষ দেখাচ্ছে।” আমি বললুম, “ছেলেমানুষ না তো কী । আমার বয়স এই ছত্ৰিশের বেশি নয়- সঁইত্রিশে পড়ব ।” আবার অচিরার সেই কলমধুর কণ্ঠের হাসি। আমার মনে যেন দুনালয়ের ঝংকারে সেতার বাজিয়ে দিল। বললে, “দাদুর কাছে সবাই ছেলেমানুষ। আর উনি নিজে সব ছেলেমানুষের আগরওয়াল।” অধ্যাপক হেসে বললেন, “আগরওয়াল! ভাষায় নতুন শব্দের আমদানি।” অচিরা বললে, “মনে নেই, সেই যে তোমার মাড়োয়ারি ছাত্র কুন্দনলাল আগরওয়ালা, আমাকে এনে দিত বোতলে করে কঁচা আমের চাটুনি। তাকে জিগগোসা করেছিলুম আগরওয়াল শব্দের অর্থ কী- সে ফস করে বলে দিল পায়োনিয়র।” অধ্যাপক বললেন, “ডাক্তার সেনগুপ্ত, আপনার সঙ্গে আলাপ হল যদি আমাদের ওখানে খেতে GRAN RGR (NØ ” “কিছু বলতে হবে না। দাদু, যাবার জন্যে ওঁর মন লাফালাফি করছে। আমি যে এইমাত্র ওঁকে বলে দিয়েছি দেশকালের মিলনতত্ত্ব তুমি ব্যাখ্যা করবে।” মনে মনে বললুম, বাসারে, কী দুটুমি।” অধ্যাপক উৎসাহিত হয়ে বলে উঠলেন, “আপনার বুঝি “টাইম-স্পেস-এর-”