পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিক ᏔᏍᏄᏬ সেইজনেই কেবল কাজ চাপা দিয়ে জবাবটাকে সে ঢাকা দেয়। মাঝে মাঝে এক-একবার ইচ্ছা হয়, কাজ বন্ধ করে কান পেতে শুনি পথ দিয়ে কেউ আসছে কি না। ইচ্ছা হয়, আর ঘর না বাড়িয়ে ঘরে আলো জ্বালি, আর সাজ-সরঞ্জাম না জুটিয়ে ফুল-ফোঁটার বেলা থাকতে একটা মালা গেঁথে রাখি । DSBDB DD KSS BBDS DBBO KB B BD DBSS DDBB BD DL DDD মাপকাঠি নিয়ে ওজন-দরে আর গজের মাপে সমস্ত জিনিস যাচাই করছে। সে কেবলই বলছে, “আরো না হলে চলবে না ।” "एका ष्ठ्द नी ' “সে যে মন্ত বড়ো ।” "क भठ बggों।” বাস, চুপ। আর কথা নেই। যখন তাকে চেপে ধরি। “অমন করে এড়িয়ে গেলে চলবে না, একটা জবাব দিতেই হবে" তখন সে রেগে উঠে বলে, “জবাব দিতেই হবে, এমন কী কথা। যার উদ্দেশ মেলে না, যার খবর পাই নে, যার মানে বোঝবার জো নেই, তুমি সেই কথা নিয়েই কেবল আমার কাজ কামাই করে দাও। আর, আমার এই দিকটাতে তাকাও দেখি। কত মামলা, কত লড়াই ; লাঠিসড়কি-পাইক-বরকন্দাজে পাড়া জুড়ে সুগল ; মিস্ত্ৰিতে মজুরে ইট-কাঠ-চুন-সুরকিতে কোথাও পা ফেলবার জো কী । সমস্তই স্পষ্ট ; এর মধ্যে আন্দাজ নেই, ইশারা নেই। তবে এ-সমস্ত পেরিয়েও আবার প্রশ্ন কেন ।” শুনে তখন ভাবি, মনটাই সেয়ানা, আমিই অবুঝ । আবার বুড়িতে করে ইট বয়ে আনি, চুনের সঙ্গে সুরকি মেশাতে থাকি । NR এমনি করেই দিন যায়। আমার ভূমি দিগন্ত পেরিয়ে গেল, ইমারতের পাচতলা সারা হয়ে ছাতলার ছাদ পিটোনো চলছে। এমন সময়ে একদিন বাদলের মেঘ -কেটে গেল ; কালো মেঘ হল সাদা ; কৈলাসের শিখর থেকে ভৈরোর তান নিয়ে ছুটির হাওয়া বইল, মানস-সরোবরের পদ্মগন্ধে দিনরাত্রির দণ্ডপ্রহরগুলোকে মৌমাছির মতো উতলা করে দিলে। উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি, সমস্ত আকাশ হেসে উঠেছে আমার ছয়তলা ঐ বাড়িটার উদ্ধত তারাগুলোর দিকে চেয়ে । আমি তো ব্যাকুল হয়ে পড়লেম ; যাকে দেখি তাকেই জিজ্ঞাসা করি, “ওগো, কোন হাওয়াখানা থেকে আজ নহবত বাজছে বলে তো ।” তারা বলে, “ছাড়ো, আমার কাজ আছে।” একটা খ্যাপা পথের ধারে গাছের গুড়িতে হেলান দিয়ে, মাথায় কুন্দাফলের মালা জড়িয়ে চুপ করে বসে ছিল। সে বললে, “আগমনীর সুর এসে পৌঁছল |” আমি যে কী বুঝলেম জানি নে ; বলে উঠলেম, “তবে আর দেরি নেই। " সে হেসে বললে, “না, এল বলে ।” তখনই খাতাঞ্জিখানায় এসে মনকে বললেম, "এবার কাজ বন্ধ করে। " মন বললে, “সে কী কথা । লোকে যে বলবে অকৰ্মণা |" আমি বললেম, “বলুক গে।” মন বললে, “তোমার হল কী । কিছু খবর পেয়েছ নাকি ৷” আমি বললেম, “হা, খবর এসেছে।” “কী খবর ” · মুশকিল, স্পষ্ট করে জবাব দিতে পারি নে। কিন্তু, খবর এসেছে । মানস-সরোবরের তীর থেকে আলোকের পথ বেয়ে বঁাকে ফঁাকে হাঁস এসে পৌঁছল। মন মাথা নেড়ে বললে, “মন্ত বড়ো রথের চুড়ো কোথায়, আর মন্ত ভারি সমারোহ ? কিছু তো দেখি নে, শুনি নে ৷”