পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q 8(ሱ እ তা হলে সেই আলোর যুগে তোমার নাতনি হয়েই জন্মাব। এবারকার মতো দেহধারিণীর পরে ধৈর্য রক্ষা কোরো । এখন চললুম সিনেমায়। কিসের পালা । বৈদেহীর বনবাস । N8 পরদিন সকালবেলায় প্রাতরাশে আমার নির্দেশমত পূপেদিদি নিয়ে এল পাথরের পাত্রে ছােলভিজে এবং গুড়। বর্তমান যুগে পুরাকালীন গীেড়ীয় খাদ্যবিধির রেনেসঁস-প্রবর্তনে লেগেছি। দিদিমণি জিগেস করলে, চা হবে কি । আমি বললুম, না, খেজুর-রস । দিদি বললে, আজ তোমার মুখখানা অমন দেখছি কেন । কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখেছি না কি । আমি বললুম, স্বপ্নের ছায়া তো মনের উপর দিয়ে যাওয়া-আসা করছেই- স্বপ্নও মিলিয়ে যায়, ছায়ারও চিহ্ন থাকে না । আজ তোমার ছেলেমানুষির একটা কথা বার বার মনে পড়ছে, ইচ্ছে করছে दनि । दन-नीं । সেদিন লেখা বন্ধ করে বারান্দায় বসে ছিলুম। তুমি ছিলে, সুকুমারও ছিল। সন্ধে হয়ে এল, রাস্তার বাতি জ্বালিয়ে গেল, আমি বসে বসে সত্যযুগের কথা বানিয়ে বানিয়ে বলছিলুম। বানিয়ে বলছিলে । তার মানে ওটাকে অসত্যযুগ করে তুলছিলে । ওকে অসত্য বলে না। যে রশ্মি বেগনির সীমা পেরিয়ে গেছে তাকে দেখা যায় না বলেই সে মিথ্যে নয়, সেও আলো । ইতিহাসের সেই বেগনি পেরোনো আলোতেই মানুষের সত্যযুগের সৃষ্টি । তাকে প্রাগৈতিহাসিক বলব না, সে আলট্ৰা-ঐতিহাসিক । আর তোমার ব্যাখ্যা করতে হবে না। কী বলছিলে বলো । আমি তোমাদের বলছিলুম, সত্যযুগে মানুষ বই পড়ে শিখত না, খবর শুনে জানত না, তাদের জানা ছিল হয়ে-উঠে জানা । কী মানে হল বুঝতে পারছি নে । একটু মন দিয়ে শোনো বলি। বোধ হয় তোমার বিশ্বাস তুমি আমাকে জান ? দৃঢ় বিশ্বাস । , জােন কিন্তু সে জানায় সাড়ে-পনেরো আনাই বাদ পড়ে গেছে। ইচ্ছে করলেই তুমি যদি ভিতরে ভিতরে আমি হয়ে যেতে পারতে তা হলেই তোমার জানাটা সম্পূৰ্ণ সত্য হত । তা হলে তুমি বলতে চাও আমরা কিছুই জানি নে ? জানিই নে তো । সবাই মিলে ধরে নিয়েছি যে জানি, সেই আপসে ধরে নেওয়ার উপরেই আমাদের কারবার । কারবার তো ভালেই চলছে । চলছে, কিন্তু এ সত্যযুগের চলা নয় । সেই কথাই তোমাদের বলছিলুম- সত্যযুগে মানুষ দেখার জানি জানত না, ছোওয়ার জানা জানত না, জানত একেবারে হওয়ার জানা । মেয়েদের মন প্রত্যক্ষকে আঁকড়ে থাকে ; ভেবেছিলেম আমার কথাটা অত্যন্ত অবাস্তব ঠেকবে। পুপুর কাছে, ভালোই লাগবে না। দেখলুম একটু ঔৎসুক্য হয়েছে। বললে, বেশ মজা । একটু উত্তেজিত হয়ে উঠেই বললে, আচ্ছা, দাদামশায়, আজকাল তো সায়ালে অনেক বুজরুগি করছে ; মরা মানুষের গান শোনাচ্ছে, দুরের মানুষের চেহারা দেখাচ্ছে, আবার শুনছি। সীসেকে সোনা SOOO