পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ved R রবীন্দ্র-রচনাবলী নয়। টুকু চলে ছোটাে জিনিসে, কিন্তু গড়নওয়ালা জিনিসে নয়। চুনটুকু হয়, ‘পদ্মটুকু হয় না। আংটিটুকু হয় না, পশমটুকু হয়। সন্ন্যাসীঠাকুরের রাগটুকু প্রভৃতি অবত্তবাচক শব্দেও চলে । "একটুকু হয়, কিন্তু দুটুকু ‘তিনটুকু হয় না। ঐটুক' শব্দের সঙ্গে ‘খনি জোড়া যায় ‘খানা যায়ন, "একটুকখানি, কিন্তু “একটুকখানা নয়। জীবাবাচক শব্দে খাটে না ; “একটুক জীব নেই কোথাও । মুকুট নেির্দশক পদ আছে যা শব্দের পূর্বে বসে। তার সর্বন ডাকে, যেন, ( R è V বাংলা বিশেষ্যশব্দে সংস্কৃত বিশেষ্যশব্দের অনুস্বার বিসর্গ না থাকতে কর্তৃকারকে চিহ্নের কোনো উৎপাত নেই । একেবারে নেই বলাও চলে না । কর্তৃপদে মাঝে মাঝে একারের সংকেত দেখা যায়, যেমন : পাগলে কী না বলে । ভাষাবিজ্ঞানীরা এইরকম প্রয়োগকে তির্যকরীপ বলেন, এ যেন শব্দকে তাড়চা করে দেওয়া। সব গৌড়ীয় ভাষায় এই তির্যকরূপ পাওয়া যায়, যেমন : দেবে জনে ঘোড়ে। বাংলায় বলি : দেবে মানবে লেগেছে, পাঁচজনে যা বলে। ‘ঘোড়ে বাংলায় নেই, আছে। ‘ঘোড়ায় ; ঘোড়ায় লাথি মেরেছে। এই তির্যকরূপের ভিতর দিয়েই কারকের বিভক্তিগুলো তৈরি হয়েছে, আর হয়েছে বহুবচনের রূপ, যেমন : মানুষে থেকে, মানুষেরা মানুষেতে মানুষেদের । তোমা আমি যাহা তাহা থেকে ; তোমার আমার যাহার তাহার তোমাকে আমাকে ইত্যাদি । এই তির্যকরূপের কর্তৃকারক এক সময়ে সাধারণ অর্থে ছিল : আপনে শিখায় প্ৰভু শচীর নন্দনে, সেই আপনে করু। সেবা । প্রাচীন রামায়ণে দেখা যায় নামসংজ্ঞায় প্রায় সর্বত্রই এই তির্যকরূপ, যেমন : সুমিত্ৰায়ে কৌশল্যায়ে মন্থরায়ে লোমপাদে । এখন এর ব্যবহারে একটা বিশেষত্ব ঘটেছে। “বানরে কলা খায়’ বলে থাকি, ‘গোপালে সন্দেশ খায় বলি নে । বাংলার কোনো কোনো অংশে তাও বলে শুনেছি । ময়মনসিংহ গীতিকায় আছে ; কোনো দোষে দোষী নয়। আমার সোয়ামিজনে । শ্ৰেণীবাচক কর্তৃপদে তির্যকরূপে দেখা যায়, অন্যত্র যায় না। “বাঘে গোরুটাকে খেয়েছে বললে বোঝায় ; বাঘজাতীয় জন্তুতে গোরুকে খেয়েছে, ভালুকে খায় নি। যখন বলি “রামে মারলে মারব, রাবণে মারলেও মরব, তখন ব্যক্তিগত রাম রাবণের কথা বলি নে ; তখন রামশ্ৰেণীয় আঘাতকারী ও রাবণশ্রেণীয় আঘাতকারীর কথা বলা হয় । “জন' শব্দের তির্যকরীপ “জনা' । একো জনা একে রকমের ; এই জনা’ বিশেষ একজনের সম্বন্ধে DSSzBBDD STDESTD TuBDBSSBBSuYS SDBD BBLBD STDDS মনে রাখা দরকার, কর্তৃপদের এই তির্যকরূপ জড় পদার্থে খাটে না। যখন বলি ‘মেঘে অন্ধকার করেছে তখন বুঝতে হবে, ‘মেঘে করণকারক । গৌড়ীয় ভাষার প্রাচীন ইতিহাসে দেখা যায়, শব্দরূপে সম্বন্ধপদের চিহ্নই প্রাধান্য পেয়েছিল । অবশেষে প্রয়োজনমত তারই উপরে স্বতন্ত্র কারকের বিভক্তি যোগ করতে হয়েছে। তারই নিদর্শন পাই কর্মকারকে “তোমারে ‘শ্ৰীরামের প্রভৃতি শব্দে । আধুনিক বাংলা পদ্যেও এই রে বিভক্তিরই প্রাধান্য । বাংলা রামায়ণ-মহাভারতে কর্মকারকে কে বিভক্তি অল্প । কবিকঙ্কণে দেখা গেছে ; খাওয়াব তোমাকে হে নবাৎ আস্ররসে । অন্যত্র ; উজানী নগরকে বাসিবে যেন হিম । এরকম প্রয়োগ বেশি নেই। বাংলা নির্বস্তুক পদার্থ-বাচক শব্দের কর্মকারকে টাটির প্রয়োগবাহুল্য, যথা : “মৃত্যুভয় দূর করো', "চক্ষুলজা ছাড়ো” । কিন্তু ওরই মধ্যে একটু বিশেষত্বের ঝোক দিয়ে বলা চলে ; মৃত্যুভয়টা দূর করো, চক্ষুলজাটা ছাড়ো। ‘মৃত্যুভয়টাকে দূর করো' বলতেও দোষ নেই। মানুষের বা জন্তু-জানোয়ারের বেলায় কর্মকারকে চিহ্ন নিয়ে শৈথিল করা হয় নি ; গোপাল যদি