পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাভাষা-পরিচয় WR) থেকে ছাড়া দিতে কুষ্ঠিত হয়নি, আভিধানিক শাসনকে লঙ্ঘন করে সে বোবার প্রকাশ-প্ৰণালীকেও অঙ্গীকার করে নিয়েছে। ধনাত্মক শব্দগুলিতে তার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছি। পোকা কিলবিল করছে ; এ বাক্যের ভাবটা ছবিটা কোনো স্পষ্ট ভাষায় বলা যায় না। খিটখিটো শব্দের প্রতিশব্দ ইংরেজিতে আছে। irritable, peewish, pettish ; কিন্তু খিটখিটো শব্দের মতো এমন তার জোর নেই। নেশায় চুরচুর হওয়া, কটুমটু করে তােকানো, ধপাস করে পড়া, পাটনটিন করা, গা ম্যাজ ম্যাজ করা : ঠিক এসব শব্দের ভাব বোঝানো ধাতুপ্ৰত্যয়ওয়ালা ভাষার কর্ম নয়। ইংরেজিতে বলে creeping sensation,* বলে ‘গা ছমছম করা ; আমার তো মনে হয় বাংলারই জিত। গুটিকয়েক রঙের বোধকে ধ্বনি দিয়ে প্রকাশ করায় বাংলা ভাষার একটা আকুতি দেখতে পাওয়া যায় : টুকটুকে, টকটকে, দিগদগে লাল ; ধবধবে, ফ্যাকফেকে, ফ্যাটফোেট সাদা ; মিসিমিসে, কুচুকুচে কালো। বাংলায় শব্দের দ্বিত্ব ঘটিয়ে যে ভাবপ্রকাশের রীতি আছে সেও একটা ইশারায় ভঙ্গি, যেমন : টাটকা-টাটকা গরম-গরম শীত-শীত মেঘ-মেঘ জ্বর-জ্বর যাব-যাব উঠি-উঠি । অর্থের অসংগতি, অতু্যক্তি, রূপক-ব্যবহার, তাতেও প্রকাশ হয় ভঙ্গির চাঞ্চল্য ; অন্য ভাষাতেও আছে, কিন্তু বাংলায় আছে প্রচুর পরিমাণে । আকাশ থেকে পড়া, মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া, হাড় কালি করে দেওয়া, পিটিয়ে লম্বা করা, তেসে দেওয়া, গায়ে ফু দিয়ে বেড়ানো, নাকে তেল দিয়ে ঘুমোনো, তেলে বেগুনে জ্বলা, পিত্তি জ্বলে যাওয়া, হাড়ে হাড়ে বজাতি, ঘেন্না পিত্তি, বুদ্ধির টেকি, পাড়া মাথায় করা, তুলো ধুনে দেওয়া, ঘোল খাইয়ে দেওয়া, হেসে কুরুক্ষেত্র, হাসতে হাসতে পেটের নাড়ি ছেঁড়া, কিল খেয়ে কিল চুরি, আদায় কঁচকলায়, আহলাদে আটখানা ; এমন বিস্তর আছে । ংলায় অনেক জোড়া শব্দ আছে যার এক অংশে অর্থ, অন্য অংশে নিরর্থকতা । তাতে করে অর্থের চারিদিকে একটা ঝাপসা পরিমণ্ডল সৃষ্টি করা হয়েছে ; সেই জায়গাটাতে যা তা কল্পনা করবার ७४ा थोंक । আমরা বলি ওষুধপত্র'। 'ওষুধ" বলতে কী বোঝায় তা জানা আছে, কিন্তু “পত্রটা যে কী তার সংজ্ঞা নির্ণয় করা অসম্ভব । ওটুকু অব্যক্তই রেখে দেওয়া হয়েছে, সুতরাং ওতে অনেক কিছুই বোঝাতে পারে। হয়তো কীভারমিকশ্চারের সঙ্গে মকরধ্বজ, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, থমীটর, কুইনীনেব বড়ি, হােমিয়োপ্যাথি, ওষুধের বাক্স । হয়তো তাও নয়। হয়তো কেবলমাত্র দু বোতল ডি গুপ্ত । এমনি ‘মালপত্র "দলিল-পত্ৰ বিছানাপত্র প্রভৃতি শব্দে ব্যক্ত অব্যক্তের যুগলমিলন । আর-একরকম জোড়মেলানো শব্দ আছে, যেখানেই দুই ভাগেরই এক মানে, কিংবা প্রায় সমান LO S DLDD SBBDBBDBSSSDuDDS BB YD BuD L DB BBDBD D DDSsB ওতে “লোক' শব্দের অর্থের সঙ্গে অনির্দিষ্ট লোকসংঘের ব্যাপকতা বোঝায় । অন্যরকম করে বলতে গেলে হয়তো বলতুম, হাজার হাজার লোক চলেছে ; অথচ গুণে দেখলে হয়তো আড়াইশোর বেশি লোক পাওয়া যেত না । খুব "চড়াচাপড়' লাগালে। ওর মধ্যে চড়টা সুনিশ্চিত, চাপড়টা অনিশ্চিত । ওটা কি তবে একবার গালে চড়, একবার পিঠে চাপড়। খুব সম্ভব তা নয়। তবে কি অনেকগুলো চড় । হতেও পারে । মারাধরা মারধোর ; বর্ণিত ঘটনায় শুধু হয়তো মারাই হয়েছিল। কিন্তু ধরা হয় নি। কিন্তু "মারধোরা শব্দের দ্বারামারটাকে সুনির্দিষ্ট সীমার বাইরে ব্যাপ্ত করা হল । যে উৎপাতটা ঘটেছিল তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলো এই শব্দে ইঙ্গিতের মধ্যে সেরে দেওয়া হয়েছে । ‘কালিকিষ্টি এটা একটা ভঙ্গিওয়ালা কথা । শুধু ‘কালো” বলে যখন মনে তৃপ্তি হয় না। তখন তার সঙ্গে কিষ্টি যোগ করে কালিমাকে আরো অবজ্ঞায় ঘনিয়ে তোলা হয় । ভাবনাচিন্তা আপদবিপদ কাটাৰ্ছােটা হাকডাক শব্দে অর্থের বিস্তার করে । শুধু “চিন্তা’ দুঃখজনক, क्रिङ्, 'छादनाठिंबा' विद्धि धाव६ ौिधष्ठि ।