পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 88 রবীন্দ্র-রচনাবলী দাও! মরে যাই, মরে যাই। কোথা থেকে নামল এত দয়, এত প্রেম ! নামল সেই ভীরুর কাছে যে সবার চেয়ে অধোগ্য । আর কিসের ভয় আমার! জল দাও ! সেই জল-ধে আমার জন্ম ভরে উপচে উঠেছে, না দিতে পারলে তো বাচব না। জল দাও! এক নিমেষে জেনেছি, জল আছে আমার, অফুরান জল, সে আমি জানাব কাকে । তাই তো ডাকছি দিনরাত । শুনতে যদি না পান, ভয় নেই, দে তোর মস্তর পড়ে। সইবে তার সইবে । মা। মাঠপারের রাস্ত দিয়ে ঐ-যে কারা চলেছে, প্রকৃতি, পীতবসন-পরা । প্রকৃতি। তাই তো, ও ষে দেখছি সংঘের সব শ্রমণ। শুনছ না, পড়ছেন মস্থ ? পথে শ্রমণের । বুদ্ধে স্থস্থদ্ধে করুণামহান্নবো যোচ্চস্ত স্বন্ধকবর-এ্যানলোচনে । লোকসল পাপুপকিলেসঘাতকো दन्माधि वृक्कम् अश्मालप्द्र° उभ। প্রকৃতি। ম', ঐ-যে তিনি চলেছেন সবার আগে আগে । এই কুয়োতলার দিকে ফিরে তাকালেন না। আর-একবার তো বলে যেতে পারতেন, জল দাও । মনে হয়েছিল, আমাকে উনি ফেলে যেতে পারবেন না, আমি যে ওঁর নিজের হাতের নতুন স্থষ্টি। (বসে প’ড়ে বার বার মাটিতে মাথা ঠুকে) এই মাটি, এই মাটি, এই মাটিই তোর আপন— হতভাগিনী, কে তোকে আলোতে ফুটিয়ে তুলেছিল এক মুহূর্তের জন্তে । তাকে কি দয়া বলে । শেষে পড়তে হল এই মাটিতেই– চিরদিন মিশিয়ে থাকতে হবে এই মাটিতেই, যত লোক চলে রাস্তায় তাদের পায়ের তলায় । মা। বাছা, ভুলে যা, ভুলে যা এ সমস্ত-কিছু ! তোর এক নিমেষের স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে ওরা যাচ্ছে চলে, যাক যাক । যা টেকবার নয় তা যত শী স্ত্র যায় ততই ভালো । প্রকৃতি । এই প্রতিদিনের চাই চাই চাই, এই প্রতি মুহূর্ডের অপমান, বুকের ভিতরে এই খাচার পাখির পাখা-আছড়ে-মরা, একেই বলে স্বপ্ন ? যা বুকের সব শিরা কামড়ে ধ’রে থাকে, ছড়িতে চায় না, তাই স্বপ্ন ? আর ঐ ওরা, নেই কোনো বাধন, নেই কোনো সুখদুঃখ, নেই কোনো সংসারের বোঝা— ভেসে চলে যায় শরৎকালের মেঘের মতো— ওরাই আছে জেগে, ওরাই স্বপ্ন নয় ? মা। তোর কষ্ট দেখতে পারি নে, প্রকৃতি। ওঠ, তুই । আনৰই তাকে মন্ত্র পড়ে । নিয়ে আসব ধুলোর পথ দিয়েই । ‘কিছু চাই না’ বলার অহংকার ভাঙৰ তার— 'চাই চাই’ বলেই আসতে হবে তাকে ছুটে । প্রকৃতি । মা, তোমার মন্ত্র জীবস্মৃষ্টির আদিকালের । এদের মন্ত্র কাচ, এই