পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミミや রবীন্দ্র-রচনাবলী দিতেন না, তবু তাহার জাত সম্বন্ধে প্রশ্নমাত্র করিলেন না, পাছে বিশ্ৰী একটা উত্তর শুনিতে হয় । এমনিভাবেই দিন চলিয়া যাইতে পারিত, কিন্তু হঠাৎ একদিন বাবার মুখ ঘোর অন্ধকার দেখা গেল । ব্যাপারখানা এই— আমার বিবাহে আমার শ্বশুর পনেরো হাজার টাকা নগদ এবং পাচ হাজার টাকার গহনা দিয়াছিলেন। বাবা র্তাহার এক দালাল বন্ধুর কাছে খবর পাইয়াছেন, ইহার মধ্যে পনেরো হাজার টাকাই ধার করিয়া সংগ্ৰহ করিতে হইয়াছে ; তাহার স্বদও নিতান্ত সামান্ত নহে । লাখ টাকার গুজব তো একেবারেই ফাকি । যদিও আমার শ্বশুরের সম্পত্তির পরিমাণ সম্বন্ধে আমার বাবার সঙ্গে তাহার কোনোদিন কোনো আলোচনাই হয় নাই, তবু বাবা জানি না কোন যুক্তিতে ঠিক করিলেন, তাহার বেহাই তাহাকে ইচ্ছাপূর্বক প্রবঞ্চনা করিয়াছেন। তার পরে, বাবার একটা ধারণা ছিল, আমার শ্বশুর রাজার প্রধান মন্ত্রী-গোছের একটা-কিছু। খবর লইয়া জানিলেন, তিনি সেখানকার শিক্ষাবি ভাগের অধ্যক্ষ । বাবা বলিলেন, অর্থাং ইস্কুলের হেডমাস্টার— সংসারে ভদ্র পদ যতগুলো আছে তাহার BBB BB BB BBS BBB BBS BBS BBS BBB BB BB BK BBB BB অবসর লইবেন তখন আমিই রাজমন্ত্রী হইব । এমন সময়ে রাস-উপলক্ষ্যে দেশের কুটুম্বর আমাদের কলিকাতার বাড়িতে আসিয়া জমা হইলেন । কন্যাকে দেখিয়া তাহদের মধ্যে একটা কানাকানি পড়িয়া গেল । কানাকানি ক্রমে অক্ষুট হইতে ফুট হইয়া উঠিল। দূর সম্পর্কের কোনো এক দিদিমা বলিয়া উঠিলেন, “পোড়া কপাল আমার! নাতবউ যে বয়সে আমাকেও হার মানাইল * আর-এক দিদিমাশ্রেণীয়া বলিলেন, “আমাদেরই যদি হার না মানাইবে তবে অপু বাহির হইতে বউ আনিতে যাইবে কেন ।” আমার মা খুব জোরের সঙ্গে বলিয়া উঠিলেন, "ওমা, সে কি কথা। বউমার বয়স সবে এগারো বই ভো নয়, এই আসছে ফাঙ্কনে বারোয় পা দিবে। খোট্টার দেশে ডালরুটি খাইয়া মানুষ, তাই আমন বাড়ন্ত হইয়া উঠিয়াছে।” দিদিমারা বলিলেন, "বাছা, এখনো চোখে এত কম তো দেখি না । কস্তাপক্ষ নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে বয়স ভাড়াইয়াছে।” ম৷ বলিলেন, “আমরা যে কুষ্ঠি দেখিলাম।” কথাটা সত্য। কিন্তু কোষ্ঠীতেই প্রমাণ আছে, মেয়ের বয়স সতেরো।