পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের পথে లS A ফর্ম গণনা ক’রে পুথির দাম দেয় তাদের মন পুথি চাপা পড়ে কবরস্থ হয় । কলাষ্টিতে রসসত্যকে প্রকাশ করবার সমস্ত হচ্ছে— রূপের দ্বারাই অস্তপকে প্রকাশ করা ; অরূপের দ্বারা রূপকে আচ্ছন্ন ক'রে দেখা ; ঈশোপনিষদের সেই বাণীটিকে গ্রহণ করা, পূর্ণের দ্বারা সমস্ত চঞ্চলকে আবৃত ক’রে দেখা, এবং ম৷ গৃধ—লোভ কোরো না— এই অনুশাসন গ্রহণ করা। স্বষ্টির তত্ত্বই এই ; জগংস্থষ্টিই বল আর কলাষ্টিই বল । রূপকে মানতেও হবে, নাও মানতে হবে, তাকে ধরতেও হবে, তাকে ঢাকতেও হবে। রূপের প্রতি লোভ না থাকে ধেন। এই যে আমাদের একটা আশ্চর্ধ দেহ, এর ভিতরে আশ্চর্ষ কতকগুলো কল— হজম করবার কল, রক্তচালনার কল, নিশ্বাস নেবার কল, চিন্তা করবার কল । এই কলগুলোর সম্বন্ধে ভগবানের যেন বিষম একটা লজ্জা আছে । তিনি সবগুলোই খুব ক’রে ঢাকা দিয়েছেন। আমরা মুখের মধ্যে খাবার পুরে দাত দিয়ে চিবিয়ে খাই, এ কথাটাকে প্রকাশ করবার জন্তে আমাদের আগ্রহ নেই । আমাদের মুখ ভাবের লীলাভূমি, অর্থাং মুখে এমন কিছু প্রকাশ পায় যা রক্তমাংসের অতীত, যা অরূপ ক্ষেত্রের ; এইটেতেই মুখের মুখ্য পরিচয় । মাংসপেশী খুবই দরকারি, তার বিস্তর কাজ, কিন্তু মুগ্ধ হলুম কখন । যখন আমাদের সমস্ত দেহের সংগীতকে তারা গতিলীলায় প্রকাশ করে দেখালে । মেডিকেল কলেজে যারা দেহ বিশ্লেষণ ক’রে শরীরতত্ত্ব জেনেছে স্বাক্টকর্তা তাদের বলেন, ‘তোমাদের প্রশংসা আমি চাই নে।’ কেননা, স্বষ্টির চরমতা কৌশলের মধ্যে নেই । তিনি বলেন, "জগং-যন্ত্রের যন্ত্রীরূপে আমি যে ভালে এঞ্জিনিয়ার এটা নাই বা জানলে ।” তবে কী জানব । ‘আননারূপে আমাকে জানো।’ ভূস্তরসংস্থানে বড়ো বড়ো পাথরের শিলালিপিতে তার নির্মাণের ইতিহাস গুপ্ত অক্ষরে খোদিত আছে । মাটির উপর মাটি দিয়ে সে সমস্তই বিধাতা চাপা দিয়েছেন । কিন্তু, উপরটিতে যেখানে প্রাণের নিকেতন, আনন্দনিকেতন, সেইখানেই তার স্বর্ষের আলো চাদের আলে। ফেলে কত লীলাই চলছে তার সীমা নেই। এই ঢাকাট। যখন ছিল না তখন সে কী ভয়ংকর কাও । বিশ্বকর্মর কী হাতুড়ি-ঠোকাঠুকি, বড়ো বড়ো চাকার সে কী ঘুরপাক, কী অগ্নিকুও, কী বাস্পনিশ্বাস । তার পরে কারখানাঘরের সমস্ত জানালা দরজা বন্ধ করে দিয়ে, সবুজ নীল সোনার ধারায় সমস্ত ধুয়ে মুছে দিয়ে, তারার মালা মাথায় পরে, ফুলের পাদপীঠে পা রেখে, তিনি আনন্দে রূপের আসন গ্রহণ করলেন । এই প্রসঙ্গে আর-একটি কথা মনে পড়ল। পৃথিবীর যে-সভ্যতা তাল ঠুকে মাংসপেশীর গুময় ক’রে পৃথিবী কঁাপিয়ে বেড়াচ্ছে, কারখানাঘরের চোঙাগুলোকে ধূমকেতুর ধ্বজদও বানিয়ে আলোকের আঙিনায়/কালী লেপে দিচ্ছে, সেই বেআক্ৰ