পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8లీ ब्ररौठ-ब्रकनांवलौ এই প্রসঙ্গে এলিয়টের একটি কবিতা মনে পড়ছে। বিষয়টি এই : বুড়ি মারা গেল, সে বড়ে ঘরের মহিলা। যথানিয়মে ঘরের ঝিলিমিলিগুলো নাবিয়ে দেওয়া, শৰবাহকের এসে দস্তুরমতো সময়োচিত ব্যবস্থা করতে প্রবৃত্ত । এ দিকে খাবার ঘরে বাড়ির বড়োখানসাম ডিনার-টেবিলের ধারে বসে, বাড়ির মেজো-ঝিকে কোলের উপর টেনে নিয়ে। ঘটনাটা বিশ্বাসযোগ্য এবং স্বাভাবিক সন্দেহ নাই। কিন্তু, সেকেলে মেজাজের লোকের মনে প্রশ্ন উঠবে, তা হলেই কি যথেষ্ট হল । এ কবিতাটা লেখবার গরজ কী নিয়ে, এটা পড়তেই বা যাব কেন। একটি মেয়ের স্বন্দর হাসির খবর কোনো কবির লেখায় যদি পাই তা হলে বলব, এ খবরটা দেবার মতো বটে। কিন্তু, তার পরেই যদি বর্ণনায় দেখি, ডেন্টিস্ট্র এল, সে তার যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষা করে দেখলে মেয়েটির দাতে পোকা পড়েছে, তা হলে বলতে হবে, নিশ্চয়ই এটাও খবর বটে কিন্তু সবাইকে ডেকে ডেকে বলবার মতো খবর নয়। যদি দেখি কারও এই কথাটা প্রচার করতেই বিশেষ ঔৎসুক্য, তা হলে সন্দেহ করব, তারও মেজাজে পোকা পড়েছে। যদি বলা হয়, আগেকার কবিরা বাছাই ক’রে কবিতা লিখতেন, অতি-আধুনিকরা বাছাই করেন না, সে কথা মানতে পারি নে ; এরাও বাছাই করেন । তাজা ফুল বাছাই করাও বাছাই, আর শুকনো পোকায়-খাওয়া ফুল বাছাইও বাছাই । কেবল তফাত এই যে, এরা সর্বদাই ভয় করেন পাছে এদের কেউ বদনাম দেয় যে এদের বাছাই করার শখ আছে । অঘোরপন্থীরা বেছে বেছে কুংসিত জিনিস খায়, দূষিত জিনিস ব্যবহার করে, পাছে এটা প্রমাণ হয় ভালো জিনিসে তাদের পক্ষপাত। তাতে ফল হয়, অ-ভালো জিনিসেই তাদের পক্ষপাত পাকা হয়ে ওঠে । কাব্যে অঘোরপন্থীর সাধনা যদি প্রচলিত হয়, তা হলে শুচি জিনিসে যাদের স্বাভাবিক রুচি তারা যাবে কোথায় । কোনো কোনো গাছে ফুলে পাতায় কেবলই পোকা ধরে, আবার অনেক গাছে ধরে না— প্রথমটাকেই প্রাধান্ত দেওয়াকেই কি বাস্তব-সাধনা ব'লে বাহাদুরি করতে হবে । 靜 একজন কবি একটি সন্ত্রান্ত ভদ্রলোকের বর্ণনা করছেন— রিচার্ড কোডি যখন শহরে যেতেন পায়ে-চলা পথের মানুষ আমরা তাকিয়ে থাকতুম তার দিকে । ভদ্র যাকে বলে, মাথা থেকে পা পর্যন্ত, ছিপছিপে যেন রাজপুত্র। সাদাসিধে চালচলন, সাদাসিধে বেশভূষা— কিন্তু যখন বলতেন ‘গুডমৰ্ণিং, আমাদের নাড়ী উঠত চঞ্চল হয়ে । চলতেন যখন বালমল করত । Q