পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের পথে । & oఏ সত্য, যেমন লোককে প্রতারণা করব না, ইত্যাদি, সেগুলির ব্যতিক্রম কোনোকালে হতে পারে বলে মনে করি না । প্রভাত গঙ্গোপাধ্যায়: কিন্তু তরুণরা এই যে লিখেছেন, ভগবান প্রেম আর ভূত মানি না, সাহিত্যে তার স্থান আছে কি । রবীন্দ্রনাথ ; এ কথা পূর্বে বলেছি । মাহব যেখানে জয়ী হয়েছে সেখানে সে যা পেয়েছে তার বেশি দিয়েছে। ঐশ্বর্ধ বলতে এই বোঝায়, সে তার মূলধনের বাড়া। সেই ঐশ্বৰ্ষই প্রকাশ পায় সাহিত্যে । স্ত্রীপুরুষের সম্বন্ধের মধ্যে ঐশ্বৰ্ষই হচ্ছে প্রেম, কামনা নয় । কামনায় উদত্ত কিছু থাকে না। উদত্তটাই নানা বর্ণে রূপে প্রেমে প্রকাশ পায়। লোভ-ক্রোধের প্রবলতার মধ্যেও প্রকাশের শক্তি আছে । যুদ্ধের মধ্যে, আঘাতের মধ্যে, নিষ্ঠুরতার মধ্যে আপনাকে সে প্রকাশ করতে পারে। বর্বরতার মধ্যেও সাহিত্যের প্রকাশযোগ্য কিছু আছে, সেটা কলুষ নয়, সেটা তেজ, শক্তি । অনেক সময় অতি সভ্য জাতির প্রাণশক্তিতে শৈখিল্য ৰখন আসে তখন বাহির হতে বর্বরতার ক্রোধ ও হিংসা কাজে লাগে । অতিসভ্য জাতির চিত্ত যখন মান হয়ে আসে, চিরকালের জিনিস সে যখন কিছু দিতে পারে না, তখন তার দুর্গতি । গ্রীস যখন উন্নতির মধ্যগগনে ছিল তখন সে চিত্তেরই ঐশ্বৰ দিয়েছে, কামনা বা লালসার আভাল সেই সঙ্গে থাকলেও সেটা নগণ্য। স্রোতের সঙ্গে সঙ্গে যেমন পক্ষিলতা প্রকাশ পায় এও সেইরূপ । স্রোত ক্ষীণ হয়ে পাক বড়ো হলেই বিপদ । একজন প্রশ্ন করলেন : আপনি সাহিত্য-স্থষ্টির আদর্শের কথা বললেন। সমালোচনারও এরকম কোনো আদর্শ আছে কি না । সাহিত্য-সমালোচনায় লগুড় ও ব্যক্তিগত গালাগালিই যদি একমাত্র জিনিস হয় তা হলে সেটা সাহিত্যের পক্ষে श्रिङछनक कि नौं । রবীন্দ্রনাথ : এটা সাহিত্যিক নীতি-বিগর্হিত। ষে-সমালোচনার মধ্যে শাক্তি নাই, যা কেবলমাত্র আঘাত দেয়, কেবলমাত্র অপরাধটুকুর প্রতিই সমস্ত চিত্ত নিৰিষ্ট করে, আমি তাকে ঠিক মনে করি নে। এরূপ সমালোচনার ভিতর একটা জিনিস আছে বা বস্তুত নিষ্ঠুরতা- এটা আমাকে পীড়ন করে। সাহিত্যিক অপরাধের বিচার সাহিত্যিক ভাবেই হওয়া উচিত। অর্থাৎ, রচনাকে তার সমগ্রতার দিক থেকে দেখতে হবে। অনেক সময়ে টুকরো করতে গেলেই এক জিনিস আর হয়ে ৰায়। সমগ্র পটের মধ্যে যে-ছবি আছে পটটাকে ছিড়ে তার বিচার করা চলে না— অস্তুত সেটা জাটের বিচার নয়। স্নবিচার করতে হলে বে-শাস্তি মামুষের থাকা উচিত