পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●●8 রবীন্দ্র-রচনাবলী বেলগ্রেড, १हे म८ङचद्र >>२** কল্যাণীয়বরেষু মন্ট, তোমার চিঠিখানা পড়ে, খুব খুশি হলুম। সাধারণ তো আমাকে অহংকৃত এবং হৃদ্যতাবিহীন বলেই মনে করে । সেই জন্যেই জনসমাজে আমি যত প্রশংসা পেয়েছি তত প্রীতি পাই নি। আর সেই জন্তেই লোকে আমার ন্যায্য প্রাপ্য থেকেও যতটা পারে দাম কমাতে চেষ্টা করে। এর ঠিক কারণটা কী আমি তো ভালো বুঝতেই পারি নে। আমি যদি স্বভাবতই কঠিনহৃদয় ও স্নেহসম্পদে কৃপণ হতুম তা হলে কবি হতেই পারতুম না। অস্তরে যার রসের অভাব সে কখনোই রসসাহিত্য সৃষ্টি করতে পারে না । কিন্তু, যখন অনেক লোকের একই ধারণা হচ্ছে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তখন বলতেই হবে যে, আমার মধ্যে একটা কিছু অভাব আছে যাতে করে আমার দেশের লোক আমার হৃদয় স্পষ্ট দেখতে পায় না । সম্ভবত আমাদের দেশে হৃদয়াবেগ-প্রকাশের যে বিশেষ রীতি ও ভঙ্গী সাধারণে প্রচলিত আমার তা অভ্যাস নেই । তার দুটো কারণ আছে । প্রথমত আমাদের পরিবার একঘরে, সমাজের সঙ্গে আমাদের অস্তরঙ্গতা ঘটতেই পারে নি । দ্বিতীয়ত ছেলেবেলা থেকে আমি আমাদের পরিবারের কোণে কোণে অত্যন্ত লাজুক ও মুখচোরা ভাবেই কাটিয়েছি। আমাদের আত্মীয়বন্ধুর পরিধি অত্যন্ত সংকীর্ণ, তা ছাড়া আমাদের বাড়ির রীতি পদ্ধতি ব্যবহারে একট। স্বভাবসিদ্ধ বিশেষত্ব দাড়িয়ে গেছে কেননা আমরা সমাজের বহির্বতী । এইজন্তে আমাদের দেশে আত্মীয়তা-প্রকাশের যে-সব গলাগলি কোলাকুলি ধরন আছে তাতে আমার হাত পাকে নি। এই-সব কারণে দেশে জনসাধারণ যদি আমাকে ভুল বোঝে সে আমার ভাগ্যের দোষ । কিন্তু, একটা কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া ভালো । বঙ্কিম একদিন সাহিত্যে অগ্রণী ছিলেন । কিন্তু, আমি তো জানি তার কাছে ঘেষতে কেউ সাহল করত না— আমরা কেউ কেউ তার কাছ থেকে কিছু প্রশ্রয় পেয়েছিলুম, কিন্তু তার গা-ঘেঁষা হবার জো ছিল না। কিন্তু, আমার ঘরে চড়াও হয়ে উপদ্রব করতে না পারে এমন অপোগও ৰা নগণ্য ব্যক্তি তো বাংলাদেশে কেউ নেই। অথচ বঙ্কিমকে কেউ উদ্ধত বা কঠিনহৃদয় বলে নি । কেননা যার কাছে কেউ সহজে কিছুই পায় না তার অনুগ্রহের কণা পেলেও লোকে কৃতাৰ্থ হয় । কিন্তু, যার কাছে কোনো বাধা নেই তার কাছেই দাবির ষোলো আনা পূরণ করতে না পারলে আট আনারও রসিদ পাওয়া যায় না।

  • ठांब्रिर्थ नछवठः- २१ नtउचब्र >>२७