পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা ২৬৩ সুদৰ্শন ও কে ও ! চেয়ে দেখ সুরঙ্গমা, এত রাত্রে এই আঁধার পথে আরও একজন পথিক বেরিয়েছে যে । সুরঙ্গমা। মা, এ যে কাঞ্চীর রাজা দেখছি । সুদৰ্শন । কাঞ্চীর রাজা ? সুরঙ্গম । ভয় ক'রো না মা । সুদৰ্শন । ভয় । ভয় কেন করব ? ভয়ের দিন আমার আর নেই । কান্ধীরাজ ( প্রবেশ করিয়া ) । মা, তুমিও চলেছ বুঝি। আমিও এই এক পথেরই পথিক । আমাকে কিছুমাত্র ভয় ক’রে না । সুদৰ্শন। ভালোই হয়েছে কান্ধীরাজ—আমরা দুজনে তার কাছে পাশাপাশি চলেছি এ ঠিক হয়েছে। ঘর ছেড়ে বেরোবার মূপেই তোমার সঙ্গে আমার যোগ হয়েছিল—আজ ঘরে ফেরবার পথে সেই যোগই যে এমন শুভযোগ হয়ে উঠবে তা আগে কে মনে করতে পারত | কাঞ্চী । কিন্তু, মা, তুমি যে হেঁটে চলেছ এ তো তোমাকে শোভা পায় না। যদি অল্পমতি কর তাহলে এখনই রথ আনিয়ে দিতে পারি। সুদৰ্শন ! না না, অমন কথা ব’লে না—যে-পথ দিয়ে তার কাছ থেকে দূরে এসেছি সেই পথের সমস্ত ধুলোট পা দিয়ে মাড়িয়ে মাড়িয়ে ফিরব তবেই আমার বেরিয়ে আসা সার্থক হবে । রথে করে নিয়ে গেলে আমাকে ফাকি দেওয়া হবে । সুরঙ্গম । মহারাজ, তুমিও তো আজ ধুলোয়। এ-পথে তো হাতিঘোড়া রথ কারও দেপি নি । সুদৰ্শন । যপন রানী ছিলুম তপন কেবল সোনারুপোর মধ্যেই পা ফেলেছি—আজ র্তার ধুলোর মধ্যে চলে আমার সেই ভাগ্যদোষ পণ্ডিয়ে নেব । আজ আমার সেই ধুলে|মাটির রাজার সঙ্গে পদে পদে এই ধুলোমাটিতে মিলন হচ্ছে এ সুখের খবর কে জানত । সুরঙ্গম। । রানীমা, ওই দেপে, পূর্বদিকে চেয়ে দেখো ভোর হয়ে আসছে। আর দেরি নেই মা-ৰ্তার প্রাসাদের সোনার চুড়ার শিখর দেখা যাচ্ছে। গান ভোর হল বিভাবরী, পথ হল অবসান । শুন ওই লোকে লোকে উঠে আলোকেরি গান ।