পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ç 8ჯყo রবীন্দ্র-রচনাবলী খাটাইবার প্রয়োজন আমরা যেন যথেষ্ট সংক্ষিপ্ত করিয়া লইতে পারি। স্বপ্লাবস্থাতেও অসম্ভবকে আঁকড়িয়া পড়িয়া ছিলাম, জাগ্রত অবস্থাতেও সেই অসম্ভবকে ছাড়িতে পারিলাম না । শক্তির উত্তেজনা আমাদের মধ্যে অত্যন্ত বেশি হওয়াতে অত্যাবস্তক বিলম্বকে অনাবশুক বোধ হইতে লাগিল । বাহিরে সেই চিরপুরাতন দৈন্ত রহিয়৷ * গিয়াছে, অথচ অস্তরে নবজাগ্রত শক্তির অভিমান মাথা তুলিয়াছে, উভয়ের সামঞ্জস্ত করিব কী করিয়া ? ধীরে ধীরে ? ক্রমে ক্রমে ? মাঝখানের প্রকাগু গহবরটাকে পাথরের সেতু দিয়া বাধিয়া ? কিন্তু অভিমান দেরি সহিতে পারে না, মত্তত বলে আমার সিড়ির দরকার নাই আমি উড়িব । সময় লইয়া সুসাধ্যসাধন তো সকলেই পারে, অসাধ্যসাধনে আমরা এখনই জগৎকে চমক লাগাইয়া দিব এই কল্পনা আমাদের উত্তেজিত হইয়া উঠিয়াছে। তাহার কারণ, প্রেম যখন জাগে তখন সে গোড়া হইতে সকল কাজই করিতে চায়, সে ছোটাে হইতে বড়ো কিছুকেই অবজ্ঞা করে না, কোনো কর্তব্য পাছে অসমাপ্ত থাকে এই আশঙ্কা তাহার ঘুচে না । প্রেম নিজেকে সার্থক করিতেই চায় সে নিজেকে প্রমাণ করিবার জন্য ব্যস্ত নহে। কিন্তু অপমানের তাড়নায় কেবল আত্মাভিমানমাত্র যখন জাগিয়া উঠে তখন সে বুক ফুলাইয়া বলে, আমি ষ্টাটিয়া চলিব না আমি ডিঙাইয়া চলিব। অর্থাং পৃথিবীর অন্য সকলের পক্ষেই যাহ। পাটে তার পক্ষে তাহার কোনো প্রয়োজন নাই, ধৈর্যের প্রয়োজন নাই, অধ্যবসায়ের প্রয়োজন নাই, সুদূর উদ্দেশুকে লক্ষ্য করিয়া সুদীর্ঘ উপায় অবলম্বন করা অনাবশ্বক। ফলে দেখিতেছি পরের শক্তির প্রতি গতকল্য যেমন অন্ধভাবে প্রত্যাশা করিয়া বসিয়া ছিলাম, নিজের শক্তির কাছে আজ তেমনি অন্ধ প্রত্যাশা লইয়া আস্ফালন করিতেছি। তপনও যথাবিহিত কর্মকে ফাকি দিবার চেষ্ট ছিল এপনও সেই চেষ্টাই বর্তমান । কথামালার কৃষকের নিশ্চেষ্ট ছেলের যতদিন বাপ বাচিয়া ছিল খেতের ধারেও যায় নাই, বাপ চাষ করিত তাহারা দিব্য থাইত—বাপ যখন মরিল তপন খেতে নামিতে বাধ্য হুইল কিন্তু চাষ করিবার জন্ত নহে—তাহারা স্থির করিল মাটি খুড়িয়া একেবারেই দৈবধন পাইবে । বস্তুত চাষের ফসলই যে প্রকৃত দৈবধন এ-কথা শিপিতে তাহাদিগকে অনেক বৃথা সময় নষ্ট করিতে হইয়াছিল। আমরাও যদি এ-কথা সহজে না শিথি যে, দৈবধন কোনো অদ্ভূত উপায়ে গোপনে পাওয়া যায় না, পৃথিবীমৃদ্ধ লোক সে-ধন যেমন করিয়া লাভ করিতেছে ও ভোগ করিতেছে আমাদিগকেও ঠিক তেমনি করিয়াই করিতে হইবে, তবে আঘাত এবং দুঃখ কেবল বাড়িয়াই চলিতে থাকিবে এবং বিপথে যতই অগ্রসর হইব ফিরিবার পথও ততই দীর্ঘ ও দুর্গম इझेब्र উঠিবে | f অধৈৰ্য বা অজ্ঞানবশত স্বাভাবিক পন্থাকে অবিশ্বাস করিয়া অসামান্ত কিছু একটাকে