পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नमूह © >☾ মৰ্মস্থানে বিষসঞ্চার হইতে থাকে সে-দেশে বড়ে বড়োকারখানা যদি শহরের মধ্যে আবর্ত রচনা করিয়া চারিদিকের গ্রামপী হইতে দরিদ্র গৃহস্থগিকে আকর্ষণ করিয়া আনে তবে স্বাভাবিক অবস্থা হইতে বিচ্যুত, বাসস্থান হইতে বিশ্লিষ্ট স্ত্রীপুরুষগণ নিরানন্দকর কলের কাজে ক্রমশই কিরূপ দুৰ্গতির মধ্যে নিমজ্জিত হইতে পারে তাহা জকুমান করা কঠিন নহে। কলের দ্বারা কেবল জিনিসপত্রের উপচয় করিতে গিয়া মানুষের অপচয় করিয়া বসিলে সমাজের অধিকদিন তাহা সহিবে না । অতএব পল্লীবাসীরাই একত্রে মিলিলে যে-সকল যন্ত্রের ব্যবহার সম্ভবপর হয় তাহারই সাহায্যে স্বস্থানেই কর্মের উন্নতি করিতে পারিলে সকলদিক রক্ষ হইতে পারে। শুধু তাই নয় দেশের জনসাধারণকে ঐক্যনীতিতে দীক্ষিত করিবার এই একটি উপায়। প্রাদেশিক সভা উপদেশ ও দৃষ্টাস্ত দ্বারা একটি মণ্ডলীকেও যদি এইরূপে গড়িয়া তুলিতে পারেন তবে এই দৃষ্টাস্তের সফলতা দেখিতে দেখিতে চারিদিকে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িবে। এমনি করিয়া ভারতবর্ষের প্রদেশগুলি আত্মনির্ভরশীল ও বৃহবদ্ধ হইয়া উঠিলে ভারতবর্ষের দেশগুলির মধ্যে তাহার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা সার্থক হইয়া উঠিবে এবং সেই দৈশিক কেন্দ্রগুলি একটি মহাদেশিক কেন্দ্রচূড়ায় পরিণত হইবে। তখনই সেই কেন্দ্রটি ভারতবর্ষের সত্যকার কেন্দ্র হইবে। নতুবা পরিধি যাহার প্রস্তুতই হয় নাই সেই কেন্দ্রের প্রামাণিকতা কোথায় ? এবং যাহার মধ্যে দেশের কর্মের কোনো উদযোগ নাই কেবলমাত্র দুর্বল জাতির দাবি এবং দায়িত্বহীন পরামর্শ সে-সভা দেশের রাজকর্মসভার সহযোগী হুইবার আশা করিবে কোন সত্যের এবং কোন শক্তির বলে ? কল আসিয়া যেমন তাতকে মারিয়াছে তেমনি ব্রিটিশশাসনও সর্বগ্রহ ও সর্বব্যাপী হইয়া আমাদের গ্রাম্যসমাজের সহজ ব্যবস্থাকে নষ্ট করিয়া দিয়াছে। কালক্রমে প্রয়োজনের বিস্তারবশত ছোটো ব্যবস্থা যখন বড়ো ব্যবস্থায় পরিণত হয় তখন তাহাতে ভালো বই মন্দ হয় না—কিন্তু তাহা স্বাভাবিক পরিণতি হওয়া চাই। আমাদের ষে গ্রাম্যব্যবস্থা ছিল, ছোটো হইলেও তাহ আমাদেরই ছিল, ব্রিটিশ ব্যবস্থা যতবড়োই হউক তাহা আমাদের নহে । সুতরাং ত্যহাতে যে কেবল আমাদের শক্তির জড়তা ঘটিয়াছে তাহা নহে তাহ আমাদের সমস্ত প্রয়োজন ঠিকমতো করিয়া পূরণ করিতে। পারিতেছে না। নিজের চক্ষুকে অদ্ধ করিয়া পরের চক্ষু দিয়া কাজ চালানো কখনোই ঠিকমতে হইতে পারে না । এখন তাই দেখা যাইতেছে গ্রামের মধ্যে চেষ্টার কোনো লক্ষণ নাই। জলাশয় পূর্বে ছিল আজ তাহা বুজিয়া আসিতেছে, কেননা দেশের স্বাভাবিক কাজ বন্ধ। যে গোচারণের মাঠ ছিল তাছা রক্ষণের কোনো উপায় নাই ; ষে দেবালয় ছিল তাহ