পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©©8 \ রবীন্দ্র-রচনাবলী ( আচরণ অত্যন্ত অসংগত বলিয়া বোধ হয়। লোকে ভুলিয়া যায় বহুকালের ক্ষুদ্র ক্ষুত্র বেদনা, অবিচার, অবিশ্বাস, অপমান হঠাৎ একটা তুচ্ছ মন্ত্রবলে বিরাট আকার ধারণ করিয়া উঠে। মনে হয় সে যেন একটা আকস্মিক অতিপ্রাকৃত দৈৰস্থষ্টি, কেহ যেন পূর্বে হইতে তাহার জন্ত অপেক্ষা করিতে পারে না । কিন্তু তাহ আকস্মিক নৰে অতি দীর্ঘকাল ধরিয়া অতিশয় মন্দগতিতেই প্রাক্কত নিয়মের রাজপথ দিয়া সে চলিয়া আসে, তাহার মৌন দীনভাব দেখিয়া কেহ তাহাকে লক্ষ্য করে না । ş? Abs = 1 পূৰ্বদেশীয়দের এই নীরব সহিষ্ণুতা যাহাতে পশ্চিমদেশীয়দিগকে অলক্ষ্যে অসতর্ক ও ঔদ্ধত্যে লইয়া যায়, ইহাই প্রাচ্য প্রজা ও পাশ্চাত্য রাজা উভয়েরই পক্ষে বিপদের মূল। ইহা হইতেই গোরা সৈন্যদের মজার খেলা ও কাল আদমিদের অকস্মাং উন্মত্ততার স্বষ্টি হয় । যাহা হউক, এইরূপ সংঘটন এবং সংঘর্ষে প্রজাদের আন্তরিক সন্তাপ যে কিরূপ বাড়িয়া উঠিতেছে তাহা পরিমাণ করিবার উপায় নাই । যে-সকল ইংরেজ কথায় কথায় ঘুষা লাথি চড় এবং গুয়র নিগর সম্ভাষণ প্রয়োগ করিতে সর্বদা প্রস্বত র্তাহার প্রত্যহই ভারতবর্ষে কী প্রকার বিপংপাতের ভিত্তি রচনা করিতেছেন তাহ। তাহারা জানেন না, এবং ষে ইংরেজসমাজ এইরূপ রূঢ়তা ও অবজ্ঞাপরতার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার নৈতিক বাধা প্রদান করেন না তাহার ষে-শাখায় বসিয়া আছেন সেই শাপ ছেদনে প্রবৃত্ত । আমাদের প্রতি সাধারণ ইংরেজের এই প্রকার ভাবই প্রজাবিদ্রোহের ভগব । র্তাহারা আচারে ব্যবহারে ভাষায় ভঙ্গিতে সর্বদাই আমাদের মর্মস্থানকে ক্ষুব্ধ করিতেছেন । এমন কি, তাহাদের মধ্যে এমন মূঢ়চেতারও অভাব নাই যাহারা অসহ্য অবজ্ঞার আঘাতে । প্রজা-হৃদয়ে অপমানক্ষত সর্বদা জাগাইয়া রাখাই রাজনৈতিক হিসাবে কর্তব্য জ্ঞান করেন। তাহারা পথে চলিতে চাবুক তুলিয়া সেলাম শিখাইতে শিখাইতে অগ্রসর হন । ইহাকেই বলে প্রজাবিদ্রোহ । এবং নিয়ত এই বিদ্রোহেই প্রজাৰ হইবা প্রজাপতির কালাগ্নি উত্তরোত্তর প্রজলিত হইতে থাকে । ইংরেজ কি সেই চিরজাগ্রত প্রজাপালকের বিশ্বনিয়মের প্রতিও প্রভূত্বমদোদ্ধত ভ্ৰকুট নিক্ষেপ করিবেন ? প্রজাদের সংবাদপত্র, সভাসমিতি, এবং বাগ্নিবর্গ আছে, রুদ্রমূর্তি রাজা মুহুর্তের মধ্যে তাহাজের বাগরোধ করিয়া দিতে পারেন কিন্তু প্রজাপতির সভা নিঃশব্দ নীরব এবং তাহার বিচার সুচির কিন্তু সুনিশ্চিত । Nలిe &