পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©©& রবীন্দ্র-রচনাবলী বরঞ্চ যে-সকল জাতি মিশ্রিত হইয়া ইংরেজ মহাজাতি রচিত হইয়াছে তাহারা মূলত ভিন্নগোত্রীয় নহে। কিন্তু হিন্দুদের মধ্যে বিসদৃশ জাতিপরম্পরা যেমন একত্র মিশ্রিত হইয়াছে জগতে এমন আর কুত্রাপি ঘটে নাই। স্পেক্টেটর যে স্বাভাবিক পরজাতিবিদ্বেষের কথা বলিয়াছেন আদিম আর্বদের মধ্যে তাহা প্রচুর পরিমাণেই ছিল। আদানপ্রদান আচারবিচার, এমন কি, জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চায় তাহারা আপনাদিগকে অনার্ষদের সংস্রব হইতে দূরে রক্ষা করিবার জন্ত একান্ত চেষ্টা করিয়াছিলেন । - এ এক বহুদিনব্যাপী প্রকাগু যুদ্ধ। রামায়ণ-মহাভারতের সুবিশাল ছন্দঃস্রোতের মধ্যে এই প্রাণপণ যুদ্ধের প্রলয়কল্লোল এখনও ধ্বনিত হইতেছে। wo কিন্তু চারিদিকের সহিত চিরকাল লড়াই করা চলে না । ক্রমে বিরোধচেষ্টা শিথিল হইয়া আসে এবং অল্পে অল্পে সন্ধি স্থাপিত হয় । এবং এইরূপে ধীরে ধীরে আর্য-অনার্যের মাঝখানের ব্যবধান ক্ষীয়মাণ হইয়া আসিল এবং ক্রমে অনার্যদের সংস্কার তাহদের পূজাবিধি তাহাদের দেবতা অভিমানী আর্বাবর্তের মধ্যে প্রবেশ করিয়া তাহাকে আবর্তিত করিয়৷ তুলিল । সেইজন্যই আজ হিন্দুজাতি জ্ঞানে অজ্ঞানে আচারে অনাচারে বিবেকে এবং অন্ধ কুসংস্কারে এমন একটা অদ্ভূত মিশ্রণ হইয়া দাড়াইয়াছে। যদিচ সকল বিষয়েই আর্য-অনার্যের মধ্যবর্তী সীমা বিলুপ্তপ্রায় হইয়া আসিয়াছে, এমন কি, আমাদের বর্ণ, আকার, আয়তনে রক্তমিশ্রণেরও সাক্ষ্য দিতেছে তথাপি স্বাতন্ত্র্যরক্ষাজন্ত বহুকালব্যাপী সেই যুদ্ধচেষ্টা আজিও হিন্দুসমাজের আস্তম্ভমধ্যে সজাগ হইয়া আছে। তবে, পূর্বেকার সেই আৰ্ধ-অনার্ধের সংগ্রাম অস্ত হিংস্র উগ্রতা পরিত্যাগ করিয়াছে বটে কিন্তু তাহা পরিব্যাপ্ত হইয়া সমাজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে বিচ্ছেদ আনয়ন করিয়াছে। তাহার এক কারণ আমাদের পরস্পরের মধ্যে বৈসাদৃশু এত অধিক ষে, প্রকৃতির অনিবাৰ্ধ নিয়মে যখন আমরা মিলিতেছিলাম তখনও শেষ পর্যন্ত আমাদের স্বাআচেষ্টার বিরাম ছিল না। আকর্ষণ এবং বিপ্রকর্ষণ কেহই সম্পূর্ণ হার মানিতে চাহে নাই। । এই কারণে যদিচ আমরা বহুসংখ্যক আৰ্য অনার্ধ এবং সংকর জাতি ছিদ্ৰ নামক এক অপরূপ ঐক্যলাভ করিয়াছি, তথাপি আমরা বল পাই নাই। আমরা যেমন এক c७श्वनि विझिल्ल ! © এই দুর্বলতার প্রধান কারণ আমরা অভিভূতভাবে এক, আমরা সচেষ্টভাবে এক নছি। যাহারা আমাদের সহিত সংলগ্ন হইয়াছে, বাহাদিগকে আমরা কিছুতেই খেদাইবা