পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশিষ্ট ৬৩৫ আমাদিগকে কেমন করিয়া মারিয়াছেন এবং মলি আমাদের কান্নার উপর কতবড়ো অন্যায় ধমকট দিলেন সে-কথা লইয়া অনবরত এক সভা হইতে আর-এক সভায় এক কাগজ হইতে আর-এক কাগজে মুষলধারে অশ্রুবর্ষণ করিয়া কোনো ফল নাই। এখন স্পষ্ট করিয়া বলে কী কাজ করিতে হুইবে ? আচ্ছা মানিলাম স্বরাজই আমাদের শেষলক্ষ্য, কিন্তু কোথাও তো তাহার একটা শুরু আছে, সেটা একসময়ে তো ধরাইয়া দিতে হইবে । স্বরাজ তো আকাশকুসুম নয়, একটা কার্যপরম্পরার মধ্য দিয়া তো তাহাকে লাভ করিতে হইবে—নুতন বা পুরাতন বা ষে-দলই হউন তাহাদের সেই কাজের তালিকা কোথায়, তাহাদের প্ল্যান কী, তাহদের আয়োজন কী ? কৰ্মশূন্ত উত্তেজনায় এবং অক্ষম আস্ফালনে একদিন একান্ত ক্লাস্তি ও অবসাদ আনিবেই—ইহা মনুষ্যস্বভাবের ধর্ম—কেবলই মদ জোগাইয়া আমাদিগকে সেই বিপদের মধ্যে যেন লইয়া যাওয়া না হয় । যে-অসংযম চরিত্রদুর্বলতার বিলাসমাত্র তাহাকে সবলে ঘৃণা করিয়া কর্মের নিঃশব নিষ্ঠার মধ্যে আপন পৌরুষকে নিবিষ্ট করিবার সময় আসিয়াছে—এসময়কে যেন আমরা নষ্ট না করি । ృNర్శి 8 যজ্ঞভঙ্গ কনগ্রেস তে ভাঙিয়া গেল । এবারকার কনগ্রেসে একটা উপদ্রব ঘটিবে এ-আশঙ্কা সকল পক্ষেরই মনে পূর্বে হইতেই জাগিয়াছে কিন্তু ঠিকমতো প্রতিকারের চেষ্টা কোনো পক্ষই করেন নাই। দুই দলই কেবল নিজের বলবৃদ্ধি করিবার চেষ্টা করিয়াছেন অর্থাং উপদ্রবের সংঘাতটা যাহাতে অত্যন্ত বাড়িয়া উঠে, সেইরূপ আয়োজন হইয়াছিল। সমস্ত দেশকে লইয়া ষে-যজ্ঞের অনুষ্ঠান হয় সেই যজ্ঞের কর্তারা কে কোন বক্তৃতার বিষয় কেমন করিয়া বলিবেন বা লিখিবেন তাহাই ঠিক করিয়া খালাস পাইতে পারেন না । চারিদিকের অবস্থা বিচক্ষণতার সঙ্গে বিচার করিয়া তদনুসারে কাজের ব্যবস্থা করার ভার তাহদের উপর। কোনো কারণে কৰ্ম নষ্ট হইলে সেই কারণটাকে গালি দিয়া তাহারা নিষ্কৃতি পাইতে পারিবেন না। বারুদের ভাণ্ডারে দেশলাই জালাইতে দিলে অগ্নিকাও ঘটে ইহাতে সন্দেহ নাই—এরূপ দুৰ্ঘটনা ঘটিলে হয় দেশলাই