পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশিষ্ট Vరి:S নহে মহান অনর্থ ঘটিয়াছে। ক্ষমতাশালীর জিদ সত্যকে ক্ষণকালের জন্ত, নিজীব করিয়া ফেলিতেও পারে কিন্তু রুদ্রকে কখনোই ঠেকাইতে পারে না—এ-কথা ইংরেজ ভূলিয়াছে বলিয়া আমরা অভিযোগ আনিয়াছি কিন্তু আমরা নিজেও যদি তুলি, বল ও কলকৌশলকেই অবলম্বন জ্ঞান করিয়া সত্য ও শিবকে যদি অবমানিত করি তবে প্রলয়কে জাগ্রত করিয়া তুলিব তাহাতে সন্দেহমাত্র নাই। সত্যকে যদি আমরা রক্ষা করি ও মঙ্গলকে বিশ্বাস করি তবে ধৈর্য শাস্তি ও উদারতা আমাদের পক্ষে সহজ হইবে ; তবে বিলম্বে অসহিষ্ণু, পীড়নে ভীত ও পরাজয়ে হতাশ্বাস হুইব না ; বুদ্ধির পার্থক্য ও মতের অনৈক্যকে সহ করিব এবং স্বাধীনতা বা স্বরাজের যথার্থই অধিকার লাভ করিতে পারিব । 8 מיכאל দেশহিত বঙ্গব্যবচ্ছেদের আঘাতে বাংলাদেশে স্বাদেশিকতার যে উদ্দীপনা জলিয়া উঠিয়াছে তাহা ষে অন্যদেশের এ-শ্রেণীয় উদ্দীপনার ঠিক নকল নহে, তাহ যে আমাদের দেশের স্বকীয় প্রকৃতি অনুসারে একটি বিশিষ্টত লাভ করিয়াছে এমন কথা আমাদের দেশের কোনো বিখ্যাত ইংরেজি কাগজে পড়িয়াছি । লেখক বলেন যে, আমাদের দেশের এই স্বদেশিকতার উৎসাহ গভীরতর আধ্যাত্মিক ভাবে পূর্ণ ; এইজন্য ইহা একটা ধর্মসাধনার আকার ধারণ করিতেছে । এ-কথা নিশ্চয় মনে রাধিতে হইবে যে, আমাদের দেশের কোনো উযোগ যদি দেশের সর্বসাধারণকে আশ্রয় করিতে চায় তবে তাহ ধর্মকে অবলম্বন না করিলে কোনোমতেই কৃতকার্য হইবে না । কোনো দেশব্যাপী সুবিধা, কোনো রাষ্ট্রীয় স্বার্থসাধনের প্রলোভন কোনোদিন আমাদের দেশের সাধারণ লোকের মনে শক্তি সঞ্চার করে মাই। f অতএব আমাদের দেশের বর্তমান উদ্দীপনা যদি ধর্মের উদ্দীপনাই হইয়া দাড়ায়, দেশের ধর্মবুদ্ধিকে যদি একটা নূতন চৈতন্তে উদ্বোধিত করিয়া তোলে তবে তাহা সত্য হইবে, স্থায়ী হইবে, দেশের সর্বত্র ব্যাপ্ত হইবে সন্দেহ নাই। আমাদের বর্তমান আন্দোলন সেই সত্যতা লাভ করিয়াছে অথবা করিবে কিনা তাহা নিশ্চয় নিরূপণ করিয়া বলিবার ক্ষমতা আমি রাখি না। এইটুকু বলা যায়