দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ গ্রামের মধ্যে আর সকলেই দলাদলি, চক্রান্ত, ইক্ষুর চাব, মিথ্যা মকদ্দমা এবং পাটের কারবার লইয়া থাকিত, ভাবের আলোচনা এবং সাহিত্যচৰ্চা করিত কেবল শশিভূষণ এবং গিরিবালা । ইহাতে কাহারও ঔৎসুক্য বা উৎকণ্ঠার কোনো বিষয় নাই । কারণ, গিরিবালার বয়স দশ এবং শশিভূষণ একটি সদ্যবিকশিত এম. এ. বি. এল. । উভয়ে প্রতিবেশী মাত্র । গিরিবালার পিতা হরকুমার এককালে নিজগ্রামের পত্তনিদার ছিলেন। এখন দুরবস্থায় পড়িয়া সমস্ত বিক্রয় করিয়া তাহদের বিদেশী জমিদারের নায়েবি পদ গ্ৰহণ করিয়াছেন । যে পরগনায় তাহদের বাস সেই পরগনারই নায়েবি, সুতরাং তঁহাকে জন্মস্থান হইতে নড়িতে হয় না । শশিভূষণ এম. এ. পাস করিয়া আইনপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছেন। কিন্তু কিছুতেই কোনো কর্মে ভিড়িলেন না। লোকের সঙ্গে মেশা বা সভাস্থলে দুটাে কথা বলা, সেও তাহার দ্বারা হইয়া উঠে না । চােখে কম দেখেন বলিয়া চেনা লোককে চিনিতে পারেন না এবং সেই কারণেই লুকুঞ্চিত করিয়া দৃষ্টিপাত করিতে হয়, লোকে সেটাকে ঔদ্ধত্য বলিয়া বিবেচনা করে । স্পৰ্যার মতো দেখিতে হয় । শশিভূষণের বাপ যখন বিস্তর চেষ্টায় পর্যন্ত হইয়া অবশেষে তাঁহ’
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩০৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।