পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

«ፃ§ রবীন্দ্র-রচনাবলী আমরা তাহদের প্রথা জানি, সুতরাং আশ্চর্য হই না ;– কিন্তু সে যদি নাইয়ের নীচে প্যান্টলুন পরে, তবে তাহাকে বন্ধুভাবে নিষেধ করিয়া দিতে হয়। নিজের জিনিস নিজের নিয়মেই ব্যবহার করিতে হয়, পরের জিনিসে নিজের নিয়ম খাটাইতে গেলেই গোল বাধিয়া যায়। যে-সংস্কৃতশব্দ বাংলা হইয়া যায় নাই, তাহ সংস্কৃতেই আছে, যাহা বাংলা হইয়া গেছে, তাহা বাংলাই হইয়াছে – এই সহজ কথাটা মনে রাখা শক্ত নহে । কিন্তু কেতাবের বাংলায় প্রতিদিন ইহার ব্যতিক্রম হইতেছে। আমরা জড়-এর জ এবং যখন-এর য একই রকম উচ্চারণ করি, আলাদারকম লিখি । উপায় নাই । শিশু বাংলাগদ্যের ধাত্রী ছিলেন র্যাহারা, তাহারা এই কাণ্ড করিয়া রাখিয়াছেন । সাবেক কালে যখন শব্দটাকে বর্গ জ দিয়া লেখা চলিত – ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের পণ্ডিতরা সংস্কৃতের যৎ শব্দের অনুরোধে বর্গ্য জ-কে অন্তস্থ য করিয়া লইলেন, অথচ ক্ষণ শব্দের মূর্ধন্ত ণ-কে বাংলায় দন্ত্য ন-ই রাখিয়া দিলেন। তাহাতে, এই যখন শব্দটা একাঙ্গীভূত হরগৌরীর মতে হইল ; তাহার— আধভালে শুদ্ধ অস্তস্থ সাজে আধভালে বঙ্গ বগীয় রাজে । সৌভাগ্যক্রমে আধুনিক পণ্ডিতরা খাটি বাংলাশব্দকে অবজ্ঞা করিয়া তাহদের রচনাপংক্তির মধ্যে পারতপক্ষে স্থান দেন নাই – কেবল যে-সকল ক্রিয়া ও অব্যয় পদ নহিলে নয়, সেইগুলাকে সংস্কৃত বানানের দ্বারা যথাসাধ্য শোধন করিয়া লইয়। তবে র্তাহীদের লেখার মধ্যে প্রবেশ করিতে দিয়াছেন। এইজন্য অধিকাংশ থাস বাংলাকথা সম্বন্ধে এখনও আমাদের অভ্যাস খারাপ হয় নাই ; সেগুলার খাটি বাংলাবানান চালাইবার সময় এখনও আছে । আমরা এ কথা বলিয়া থাকি, সংস্কৃতব্যাকরণে যাহাকে ণিজন্ত বলে, বাংলায় তাহাকে ণিজন্ত বলা যায় না । ইহাতে যিনি, সংস্কৃতব্যাকরণের অপমান বোধ করেন, তিনি বলেন, কেন ণিজন্ত বলিব না, অবশু বলিব। কবিবর নবীন সেন মহাশয়ের দুইটি লাইন মনে পড়ে : কেন গাহিব না অবহু গাহিব, গাহে না কি কেহ সুস্বর বিহনে । ণিজন্ত শব্দ সম্বন্ধেও পণ্ডিতমহাশয়ের সেইরূপ অটল জেদ, তিনি বলেন, ণিজন্ত— কেন বলিব না অবগু বলিব । বলে না কি কেহ কারণ বিহনে আমরা ব্যাকরণে পণ্ডিত নই, তবু আমরা যতটা বুঝিয়াছি, তাহাতে শিচ, একটা