পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২ e রবীন্দ্র-রচনাবলী প্রথম নাগরিক বলিস নে অমন কথা । মুখে আনতে নেই। ও যদি আপনি নড়ে তা হলে কি আর রক্ষে আছে । তৃতীয় নাগরিক তা হলে ওর নাড়া খেয়ে সংসারের সব জোড়গুলো বিজোড় হয়ে পড়বে। আমরা যদি না চালাই— ও যদি আপনি চলে, তা হলে পড়ব যে চাকার তলায় । প্রথম নাগরিক ওই দেখ ভাই, পুরুতের গেছে মুখ শুকিয়ে, কোণে বসে বসে পড়ছে মস্তর। দ্বিতীয় নাগরিক সেদিন নেই রে যেদিন পুরুতের মস্তর-পড়া হাতের টানে চলত রথ । ওরা ছিল কালের প্রথম বাহন । তৃতীয় নাগরিক তবু আজ ভোরবেলা দেখি ঠাকুর লেগেছেন টান দিতে— কিন্তু একেবারেই উলটো দিকে, পিছনের পথে । প্রথম নাগরিক সেটাই তো ঠিক পথ, পবিত্র পথ, আদি পথ । সেই পথ থেকে দূরে এসেই তো কালের মাথার ঠিক থাকছে না। দ্বিতীয় নাগরিক মস্ত পণ্ডিত হয়ে উঠলি দেখি । এত কথা শিখলি কোথা । প্রথম নাগরিক ওই পণ্ডিতেরই কাছে। র্তারা বলেন— মহাকালের নিজের নাড়ীর টান পিছনের দিকে, পাঁচজনের দড়ির টানে অগত্য চলেন সামনে । নইলে তিনি পিছু হটতে হটতে একেবারে পৌছতেন অনাদি কালের অতল গহবরে ।