পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রথযাত্রা 〉やが○ সকলে। সিদ্ধিরস্তু ! ধনপতি । বলে, জয় সিদ্ধিদেবী ! সকলে । জয় সিদ্ধিদেবী ! ধনপতি। টানব কী ! এ রশি যে তুলতেই পারি নে। মহাকালের রথও যেমন ভারী, রশিও তেমনি, এ ভার বহন কি সহজ লোকের কর্ম । ( দলের লোকের প্রতি ) এসো, তোমরাও সবাই এসো। সকলে মিলে হাত লাগাও। আমার খাতাঞ্চি কোথায় গেল। এসো, এসো। এলো কোষাধ্যক্ষ ! আবার বলো, সিদ্ধিরস্তু— টানো। এসিদ্ধিরস্তু, আর-এক টান ! সিদ্ধিরপ্ত— জোরে! না, কিছুই হল না। আমাদের হাতে রশিট ক্রমেই যেন আড়ষ্ট হয়ে উঠছে। সকলে। দুয়ো ! দুয়ো ! ১ সৈনিক। যাক। আমাদের মান রক্ষা হল । ধনপতি। নমস্কার, মহাকাল ! তুমি আমার সহায়, তাই তুমি স্থির হয়ে রইলে। আমার হাতে যদি তুমি টলতে, আমারই ঘাড়ের উপরে টলে পড়তে, একেবারে পিষে যে তুম। খাতাঞ্চি । প্রভু, এই যুগে আমাদের যে সম্মান সমাদর ক্রমেই বেড়ে উঠছিল সেটার বড়ো ক্ষতি হল। ধনপতি। দেখো, এতকাল আমরা মহাকালের রথের ছায়ায় দাড়িয়ে লোকচক্ষুর অগোচরে বড়ো হয়েছি । আজ রথের সামনে এসে পড়ে আমাদের সংকট ঘটেছে— আশেপাশে লোকের দাত-কিড়মিড় অনেক দিন থেকে শুনছি। এখন যদি স্পষ্ট সবাই দেখতে পায় যে, রশি ধরে আমরাই রথ চালাচ্ছি তা হলে আমাদের উপর এমন দৃষ্টি লাগবে যে বেশিক্ষণ টিকিব না। ১ সৈনিক। যদি সেকাল থাকত তা হলে তোমার হাতে রথ চলল না বলে তোমার মাথা কাটা যেত । ধনপতি । অর্থাৎ, তোমরা তা হলে হাতে কাজ পেতে। মাথা কাটতে না পেলেই তোমরা বেকার | ১ সৈনিক । আজ কেউ তোমাদের গায়ে হাত দিতে সাহস করে না ; রাজাও না । এতে বাবা মহাকালেরই মান পর্ব হয়ে গেছে। ধনপতি। সত্যি কথা বলি– যখন সবাই গায়ে হাত দিতে সাহস করত তখন ঢের বেশি নিরাপদে ছিলুম। আজ সবাই যে আমাদের মানতে বাধ্য হয়েছে এরই মধ্যে আমাদের মরণ। মন্ত্রীমশায়, চুপ করে দাড়িয়ে ভাবছ কী।