পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& ახz রবীন্দ্র-রচনাবলী প’ড়ে খুব প্রশংসা করছিল। সে বাংলা লেখা বেশ বোঝে।” ভূপতির মনে অমলের প্রতি একটি সম্মানের ভাব জাগিয়া উঠে, ইহা চারুর একান্ত ইচ্ছা । তৃতীয় পরিচ্ছেদ উমাপদ ভূপতিকে তাহার কাগজের সঙ্গে অন্য পাচরকম উপহার দিবার কথা বুঝাইতেছিল। উপহারে যে কী করিয়া লোকসান কাটাইয়া লাভ হইতে পারে তাহ ভূপতি কিছুতেই বুঝিতে পারিতেছিল না। চারু একবার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়াই উমাপদকে দেখিয়া চলিয়া গেল । আবার কিছুক্ষণ ঘুরিয়া ফিরিয়া ঘরে আসিয়া দেখিল, দুইজনে হিসাব লইয়া তর্কে প্রবৃত্ত । উমাপদ চারুর অধৈর্য দেখিয়া কোনো ছুতা করিয়া বাহির হইয়া গেল। ভূপতি হিসাব লইয়া মাথা ঘুরাইতে লাগিল । চারু ঘরে ঢুকিয়া বলিল, “এখনো বুঝি তোমার কাজ শেষ হল না। দিনরাত ঐ একখানা কাগজ নিয়ে যে তোমার কী করে কাটে, আমি তাই ভাবি ।” ভূপতি হিসাব সরাইয়। রাখিয়া একটুখানি হাসিল। মনে মনে ভাবিল, ‘বাস্তবিক, চারুর প্রতি আমি মনোযোগ দিবার সময়ই পাই না, বড়ো অন্যায়। ও বেচারার পক্ষে সময় কাটাইবার কিছুই নাই।’ ভূপতি স্নেহপূর্ণশ্বরে কহিল, “আজ যে তোমার পড়া নেই! মাস্টারটি বুঝি পালিয়েছেন ? তোমার পাঠশালার সব উলটো নিয়ম— ছাত্রীটি পুথিপত্র নিয়ে প্রস্তুত, মাস্টার পলাতক । আজকাল অমল তোমাকে আগেকার মতো নিয়মিত পড়ায় বলে তো বোধ হয় না।” চারু কহিল, “আমাকে পড়িয়ে অমলের সময় নষ্ট করা কি উচিত। অমলকে তুমি বুঝি একজন সামান্ত প্রাইভেট টিউটর পেয়েছ ?” । *ր ভূপতি চারুর কটিদেশ ধরিয়া কাছে টানিয়া কহিল, “এটা কি সামান্য প্রাইভেট টিউটারি হল। তোমার মতো বউঠানকে যদি পড়াতে পেতুম তা হলে—” চারু। ইস্ ইস্, তুমি আর বোলো না। স্বামী হয়েই রক্ষে নেই তো আরো किहू !