পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२br७ রবীন্দ্র-রচনাবলী এক একগাছি চুড়ি তাহার হাতে দিয়া দুই হাতে দুই বালা পরাইয়া দিল। তার পরে ডাকিল, “যতীন।” যতীন আসিতেই তাহাকে বিছানায় বসাইয়া পটল তাহার হাতে কুড়ানির একছড়া সোনার হার দিল। যতীন সেই হারছড়াটি লইয়া আস্তে আস্তে কুড়ানির মাথা তুলিয়া ধরিয়া তাহাকে পরাইয়া দিল । ভোরের আলো যখন কুড়ানির মুখের উপরে আসিয়া পড়িল তখন সে আলে৷ সে আর দেখিল না। তাহার অম্লান মুখকাস্তি দেখিয়া মনে হইল, সে মরে নাই— কিন্তু সে যেন একটি অতলস্পর্শ মুখস্বপ্নের মধ্যে নিমগ্ন হইয়া গেছে। যখন মৃতদেহ লইয়া যাইবার সময় হইল তখন পটল কুড়ানির বুকের উপর পড়িয়া কাদিতে কঁাদিতে কহিল, “বোন, তোর ভাগ্য ভালো। জীবনের চেয়ে তোর মরণ সুখের।” যতীন কুড়ানির সেই শাস্তস্নিগ্ধ মৃতু্যচ্ছবির দিকে চাহিয়া ভাবিতে লাগিল, “যাহার ধন তিনিই নিলেন, আমাকেও বঞ্চিত করিলেন না।’ চৈত্র ১৩০৯ কমফল প্রথম পরিচ্ছেদ আজ সতীশের মাসি সুকুমারী এবং মেসোমশায় শশধরবাবু আসিয়াছেন— সতীশের মা বিধুমুখী ব্যস্তসমস্তভাবে তাহদের অভ্যর্থনায় নিযুক্ত। “এসে দিদি, বোসে । আজ কোন পুণ্যে রায়মশায়ের দেখা পাওয়া গেল! দিদি না আসলে তোমার আর দেখা পাবার জো নেই।” শশধর। এতেই বুঝবে তোমার দিদির শাসন কিরকম কড়া। দিনরাত্রি চোখে চোখে রাখেন । স্বকুমারী। তাই বটে, এমন রত্ব ঘরে রেখেও নিশ্চিন্ত মনে ঘুমনো যায় না। বিধুমুখী । নাকডাকার শব্দে ! স্বকুমারী। সতীশ, ছি ছি, তুই এ কী কাপড় পরেছিল। তুই কি এইরকম