পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

さぬミ রবীন্দ্র-রচনাবলী মন্মথ ষে বসিয়া বসিয়া তাহার চাল ধরিতে পারিয়াছেন, হঠাৎ জানিতে পারিয়া বিgর পক্ষে মর্মান্তিক হইয়া উঠিল। মুখ লাল করিয়া বিধু কহিলেন, "ছেলেকে মাসির কাছে পাঠালেও গায়ে সয় না, এতবড়ো মানী লোকের ঘরে আছি সে তো পূর্বে বুঝতে পারি নি।” এমন সময় বিধবা জা প্রবেশ করিয়া কহিলেন, “মেজবউ, তোদের ধন্ত । আজ সতেরো বৎসর হয়ে গেল তবু তোদের কথা ফুরালো না। রাত্রে কুলায় না, শেষকালে দিনেও দুইজনে মিলে ফিসফিস। তোদের জিবের আগায় বিধাতা এত মধু দিনরাত্রি জোগান কোথা হতে আমি তাই ভাবি । রাগ কোরো না ঠাকুরপো, তোমাদের মধুরালাপে ব্যাঘাত করব না, একবার কেবল দু মিনিটের জন্য মেজবউয়ের কাছ হতে সেলাইয়ের প্যাটার্মটা দেখিয়ে নিতে এসেছি।” চতুর্থ পরিচ্ছেদ সতীশ । জেঠাইমা । জেঠাইমা। কী বাপ । সতীশ । আজ ভাদুড়ি-সাহেবের ছেলেকে মা চা খাওয়াবেন, তুমি যেন সেখানে হঠাৎ গিয়ে পোড়ো-না। জেঠাইমা । আমার যাবার দরকার কী সতীশ । সতীশ । যদি যাও তো তোমার এ কাপড়ে চলবে না, তোমাকে— জেঠাইমা । সতীশ, তোর কোনো ভয় নেই, আমি এই ঘরেই থাকব, যতক্ষণ তোর বন্ধুর চা খাওয়া না হয়, আমি বার হব না। সতীশ । জেঠাইমা, আমি মনে করছি, তোমার এই ঘরেই তাকে চা খাওয়াবার বন্দোবস্ত করব। এ বাড়িতে আমাদের যে ঠাসাঠাসি লোক— চা খাবার, ডিনার খাবার মতো ঘর একটাও খালি পাবার জো নেই। মার শোবার ঘরে সিন্দুক-ফিন্দুক কত কী রয়েছে, সেখানে কাকেও নিয়ে যেতে লজ্জা করে। জেঠাইমা । আমার এখানেও তো জিনিসপত্র— সতীশ । ওগুলে। আজকের মতো বার করে দিতে হবে । বিশেষত তোমার এই বঁট চুপড়ি-বারকোশগুলো কোথাও না লুকিয়ে রাখলে চলবে না। জেঠাইম। কেন বাবা, ওগুলোতে এত লজ্জা কিসের । তাদের বাড়িতে কি কুটনো ফুটবার নিয়ম নেই।