পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী নলিনী। কী তুমি পাগলের মতো বকছ । আমি তোমার কী অপরাধ করেছি যে তুমি আমাকে এমন নিষ্ঠুর ভাবে – সতীশ । যেজন্ত আমি সংকল্প করেছি সে তুমি জান, নলিনী— আমি তো একবর্ণও গোপন করি নি, তবু কি আমার উপর তোমার শ্রদ্ধা আছে। নলিনী । শ্রদ্ধা ! সতীশ, তোমার উপর ওইজন্যই আমার রাগ ধরে । শ্রদ্ধা, ছি ছি, শ্রদ্ধা তো পৃথিবীতে অনেকেই অনেককে করে। তুমি যে কাজ করেছ আমিও তাই করেছি— তোমাতে আমাতে কোনো ভেদ রাখি নি । এই দেখো, আমার গহনাগুলি সব এনেছি— এগুলি এখনো আমার সম্পত্তি নয়— এগুলি আমার বাপমায়ের । আমি তাদিগকে না বলে এনেছি, এর কত দাম হতে পারে আমি কিছুই জানি নে ; কিন্তু এ দিয়ে কি তোমার উদ্ধার হবে না । শশধর। উদ্ধার হবে, এই গহনাগুলির সঙ্গে আরো অমূল্য যে ধনটি দিয়েছ তা দিয়েই সতীশের উদ্ধার হবে। নলিনী । এই-যে শশধরবাবু, মাপ করবেন, তাড়াতাড়িতে আপনাকে আমি — শশধর । মা, সেজন্য লজ্জা কী। দৃষ্টির দোষ কেবল আমাদের মতো বুড়োদেরই হয় না – তোমাদের বয়সে অামাদের মতো প্রবীণ লোক হঠাৎ চোখে ঠেকে না । সতীশ, তোমার আপিসের সাহেব এসেছেন দেখছি । আমি তার সঙ্গে কথাবার্তা কয়ে আসি, ততক্ষণ তুমি আমার হয়ে অতিথিসংকার করে। মা, এই পিস্তলট এখন তোমার জিম্মাতেই থাকতে পারে। • د ما د 6۶h H মাস্টারমশায় ভূমিকা রাত্রি তখন প্রায় দুটা । কলিকাতার নিস্তব্ধ শব্দসমুদ্রে একটুখানি ঢেউ তুলিয়া একটা বড়ো জুড়িগাড়ি ভবানীপুরের দিক হইতে আসিয়া বিজিতলাওয়ের মোড়ের কাছে থামিল। সেখানে একটা ঠিকাগাড়ি দেখিয়া, আরোহী বাবু তাহাকে ডাকিয়া আনাইলেন। তাহার পাশে একটি কোট-হ্যাট-পরা বাঙালি বিলাতফের্তা যুবা সম্মুখের আসনে দুই পা তুলিয়া দিয়া একটু মদমত্ত অবস্থায় ঘাড় নামাইয়া ঘুমাইতেছিল। এই যুবকটি নূতন বিলাত হইতে আসিয়াছে। ইহারই অভ্যর্থনা উপলক্ষে বন্ধুমহলে একটা