পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ○8ぬ অধর। ব্যাগে কী আছে । হরলাল ব্যাগ খুলিয়া অধরবাবুর হাতে দিল । অধর। মাস্টারে ছাত্রে মিলিয়া বেশ কারবার খুলিয়াছ তো। জানিতে এ চোরাই মাল বিক্রি করিলে ধরা পড়িবে, তাই আনিয়া দিয়াছ— মনে করিতেছ সাধুতার জন্য বকশিশ পাইবে ? তখন হরলাল অধরের পত্ৰখানা তাহার হাতে দিল। পড়িয়া তিনি আগুন হুইয়া উঠিলেন। বলিলেন, “আমি পুলিসে খবর দিব। আমার ছেলে এখনো সাবালক হয় নাই– তুমি তাহাকে চুরি করিয়া বিলাত পাঠাইয়াছ। হয়তো পাঁচশো টাকা ধার দিয়া তিন হাজার টাকা লিখাইয়া লইয়াছ। এ ধার অামি শুধিব না।” হরলাল কহিল, “আমি ধার দিই নাই ।” অধর কহিলেন, “তবে সে টাকা পাইল কোথা হইতে । তোমার বাক্স ভাঙিয়া চুরি করিয়াছে ?” হরলাল সে প্রশ্নের কোনো উত্তর দিল না। রতিকান্ত টিপিয়া টিপিয়া কহিল, *ওঁকে জিজ্ঞাসা করুন-না, তিন হাজার টাকা কেন, পাচশো টাকাও উনি কি কখনো চক্ষে দেখিয়াছেন।” যাহা হউক, গহনা চুরির মীমাংসা হওয়ার পরেই বেণুর বিলাত পালানো লইয়া বাড়িতে একটা হুলস্থল পড়িয়া গেল। হরলাল সমস্ত অপরাধের ভার মাথায় করিয়া লইয়া বাড়ি হইতে বাহির হইয়া আসিল । রাস্তায় যখন বাহির হইল তখন তাহার মন যেন অসাড় হইয়া গেছে । ভয় করিবার এবং ভাবনা করিবারও শক্তি তখন ছিল না। এই ব্যাপারের পরিণাম যে কী হইতে পারে মন তাহ চিন্তা করিতেও চাহিল না । গলিতে প্রবেশ করিয়া দেখিল তাহার বাড়ির সমুখে একটা গাড়ি দাড়াইয়া আছে। চমকিয়া উঠিল। হঠাৎ আশা হইল, বেণু ফিরিয়া আসিয়াছে। নিশ্চয়ই বেণু! তাহার বিপদ যে সম্পূর্ণ নিরুপায়রূপে চূড়ান্ত হইয়া উঠিবে এ কথা সে কোনোমতেই বিশ্বাস করিতে পারিল না । তাড়াতাড়ি গাড়ির কাছে আসিয়া দেখিল, গাড়ির ভিতরে তাহাজের আপিসের একজন সাহেব বসিয়া আছে। সাহেব হরলালকে দেখিয়াই গাড়ি হইতে নামিয়া তাহার হাত ধরিয়া বাড়িতে প্রবেশ করিল। জিজ্ঞাসা করিল, “আজি মফস্বলে গেলে না কেন ।” আপিসের দরোয়ান সন্দেহ করিয়া বড়োসাহেবকে গিয়া জানাইয়াছে— তিনি Չ ՀՀ 8 *