পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(t>$ * রবীন্দ্র-রচনাবলী পত্রিকায় মুদ্রিত প্রথম পাঠ ও রবীন্দ্রসদনে রক্ষিত পাণ্ডুলিপির সাহায্যে বর্তমান সংস্করণের পাঠ স্থানে স্থানে সংশোধন করা হইয়াছে। ভ্রমণবৃত্তান্তটির বিচিত্রায় মুদ্রিত পাঠের কয়েকটি অংশ গ্রন্থপ্রকাশকালে বজিত হইয়াছিল। সেই বজিত অংশগুলি এখানে সংকলিত হইল। সম্পূর্ণতাসাধনের উদ্দেশ্যে পাণ্ডুলিপি হইতে কয়েকটি প্রয়োজনীয় অংশ বন্ধনীচিহ্নিত আকারে উক্ত রচনাংশের কয়েক স্থানে সংযোজিত হইয়াছে – ৪৫৯ পৃষ্ঠায় শেষ অনুচ্ছেদের পূর্বে । সভারম্ভে পার্সিভাষায় কিছু বলা হলে পর আমি বললুম : প্রকৃতিতে নিমন্ত্রণের ভার বসস্তঋতুর পরে। তার স্বগন্ধ পুষ্পগুচ্ছে, পাখির গানে সেই নিমন্ত্রণ। তার আহবান স্বদেশী বিদেশী নিবিশেষে, তার বিশ্বভাষা তর্জমা করতে হয় না। কবির বসন্তঋতুর প্রতীক। তারা আপন দেশ আপন কালের মধ্যে থেকে সর্বদেশ সর্বকালকে আমন্ত্রণ করে । একদিন দূর থেকে পারস্তের পরিচয় আমার কাছে পৌঁচেছিল। তখন আমি বালক। সে পারস্য ভাবরসের পারস্য, কবির পারস্য। তার ভাষা যদিও পারসিক, তার বাণী সকল মানুষের । ہم * আমার পিতা ছিলেন হাফেজের অনুরাগী ভক্ত। তার মুখ থেকে হাফেজের কবিতার আবৃত্তি ও তার অনুবাদ অনেক শুনেছি। সেই কবিতার মাধুর্য দিয়ে পারস্তের হৃদয় আমাদের হৃদয়ে প্রবেশ করেছিল। আজ পারস্যের রাজা আমাকে আমন্ত্রণ করেছেন, সেই সঙ্গে সেই কবিদের আমন্ত্রণও মিলিত । আমি তাদের উদ্দেশে আমার সকৃতজ্ঞ অভিবাদন অপণ করতে চাই র্যাদের কাব্যস্থধা জীবনাস্তকাল পর্যন্ত আমার পিতাকে এত সাস্তুনা এত আনন্দ দিয়েছে। : * [ কবির আপন ভাষায় যদি দিতে পারতুম তবেই আমার যোগ্য হত। যে ভাষা অগত্যা ব্যবহার করছি আমার ভারতী সে ভাষায় সম্পূর্ণ সায় দেন না। তাই আমি এখানে যেন মুজিয়মে-সাজানো পাখি – তৰ্জমার আড়ষ্টতায় আমার পাখা বন্ধ— সে পাখাবিস্তার করে মন উড়তে পারে না, সে পাথায় সজীব প্রাণের বর্ণচ্ছটাময় নৃত্য নেই। তা হোক, মেীনের মধ্যে যে বাণী অনুচ্চারিত, বন্দনায় তারও ব্যবহার হয়ে থাকে। সেই আস্তরিক বাণীর দ্বারাই পারস্তের অমর কবিদের আমি আজ অভিবাদন করি ; সেই সঙ্গে পারস্তের অমর আত্মাকেও আমার নমস্কার, যে আত্মা ইতিহাসের