পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q>b* রবীন্দ্র-রচনাবলী And in return I bind this wreath of my verse on thy forehead, and cry : Victory to Iran বিচিত্রা। মাঘ ১৩৩৯, পৃ. ১৮-১৯ ৪৮৮ পৃষ্ঠায় তৃতীয় ছত্রের পরে যতই এখানে আমার দিন শেষ হয়ে আসছে ততই নিমন্ত্রণ আমন্ত্রণ ও অভ্যাগতের ভিড় দুর্ভেদ্য হয়ে এল। আমার অবকাশটুকু ঘিরে সপ্তরথীর শরবর্ষণ চলছে। প্রতিদিনের বিবরণ লিখে যাব দিনের মধ্যে এমন ফাক পাই নে। ঘটনাগুলো একটার উপর আর-একটা চাপা পড়ে পিণ্ড পাকিয়ে ভেসে চলে যায়, তাদের চেহারা মনে থাকে না । [ এর মধ্যে একটি কথা স্মরণীয়। আমি মনে করেছিলুম, পারসিকের জাগরণ তাদের পলিটিকৃসের চার সীমানার মধ্যেই আবদ্ধ। আমি তাদের অনেককেই বলেছি, আংশিকভাবে কেবল কর্মশক্তির উদবোধনই যথেষ্ট নয়, সঙ্গে সঙ্গে পারস্যের চিরন্তন চিত্তশক্তি স্বষ্টিশক্তির জাগরণেই তার সম্পূর্ণ গৌরব। ইতিমধ্যে দেখলুম এখানকার আর্টস্কুলের কাজ । যিনি তার অধ্যক্ষ তিনি যথার্থ গুণী । পারসিকের স্বভাবসিদ্ধ অসামান্য কারুপ্রতিভাকে জাগিয়ে তোলবার সাধনায় তিনি নিযুক্ত, বিদেশের অনুকরণে নয়, স্বদেশের প্রেরণায় । তার বিদ্যালয়ের তাতের কাজের যে নমুনা কয়টি তিনি আমাকে দিয়েছেন সেগুলিকে আমি বহুমূল্য বলে মনে করি । ] এখানকার যারা মনীষী তাদের মননশক্তির স্বকীয় বিশেষত্ব এবং আধুনিক যুগের সঙ্গে তার সংগতি সম্বন্ধে কোনো ধারণা করবার উপায় আমার নেই, কারণ এদের ভাষা আমি জানি নে। তার উদভাবনা হয়তো কোথাও না কোথাও দেখা দিয়েছে, হয়তো চিন্তা ও রচনার কাজ আরম্ভ হয়ে থাকবে। এ কথা মনে রাখতে হবে, কিছুকাল পূর্বে বাংলাদেশে যখন রামমোহন রায়ের আবির্ভাব সেই সময়ে পারস্তে বাহাইধর্মমত প্রাণাস্তিক উৎপীড়নের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করেছিল । সাম্প্রদায়িকতার অতি কঠোর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে এই ধর্ম আধুনিক যুগের সর্বজনীনতার বাণী ঘোষণা করেছে। এ কখনোই সম্ভবপর হত না যদি সম্পূর্ণভাবে এ জাতির মন সনাতনী জড়তার পাথর-চাপ মন হত। প্রাচীনকালের শাসনে রুদ্ধবুদ্ধি রুদ্ধকণ্ঠ এই দেশ বাধাবন্ধনমুক্ত হয়ে চিত্তসম্পদশালী হয়ে উঠবে তার লক্ষণ চারি দিকে যেন অনুভব করতে পারছি । আজ দশ বৎসরের মধ্যে পারস্ত অচল প্রথার অন্ধতা থেকে যে এতদূর মুক্তিলাভ করেছে এবং নূতন যুগের কঠিন সমস্যাগুলি সমাধান করবার জন্তে এতটা দূর তার আধুনিক অধ্যবসায়, তার কারণ তার মন স্বভাবতই মননশীল— পারস্যের ইতিহাসে পূর্বেও তার প্রমাণ হয়েছে। অধ্যাপক ব্রাউন বলেছেন,