পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবীন ዓ» মধুরিমা, দেখো দেখে, চন্দ্রমা তিথির পর তিথি পেরিয়ে আজ তার উৎসবের তরণী পূর্ণিমার ঘাটে পৌছিয়ে দিয়েছে। নন্দনবন থেকে কোমল আলোর শুভ্র স্বকুমার পারিজাতস্তবকে তার ডালি ভরে আনল। সেই ডালিখানিকে ওই কোলে নিয়ে বসে আছে কোন মাধুরীর মহাশ্বেতা। রাজহংসের ডানার মতো তার লঘু মেঘের শুভ্র বসনাঞ্চল স্রস্ত হয়ে পড়েছে ওই আকাশে, আর তার বীণার রুপোর তত্ত্বগুলিতে অলস অঙ্গুলিক্ষেপে থেকে থেকে গুঞ্জরিত হচ্ছে বেহাগের তান । নিবিড় অমা-তিমির হতে বাহির হল জোয়ারস্রোতে শুক্লরাতে চাদের তরণী । ভরিল ভরা অরূপ ফুলে, সাজালো ডালা অমরাকুলে আলোর মালা চামেলিবরণী শুক্লরাতে চাদের তরণী । তিথির পরে তিথির ঘাটে আসিছে তরী দোলের নাটে, নীরবে হাসে স্বপনে ধরণী । উৎসবের পসরা নিয়ে পূর্ণিমার কৃলেতে কি এ ভিড়িল শেষে তন্দ্রাহরণী শুক্লরাতে চাদের তরণী ॥ দোল লেগেছে এবার। পাওয়া আর না-পাওয়ার মাঝখানে এই দোল । এক প্রাস্তে মিলন আর-এক প্রান্তে বিরহ, এই দুই প্রান্ত স্পর্শ করে করে তুলছে বিশ্বের হৃদয়। পরিপূর্ণ আর অপূর্ণের মাঝখানে এই দোলন। আলোতে ছায়াতে ঠেকতে ঠেকতে রূপ জাগছে জীবন থেকে মরণে, বাহির থেকে অস্তরে। এই ছন্দটি বাচিয়ে যে চলতে চায় সে তে যাওয়া-আসার দ্বার খোলা রেখে দেয়। কিন্তু, ওই-ষে হিসাবি মানুষটা দ্বারে শিকল দিয়ে অঁাক পাড়ছে তার শিকল-নাড়া দাও তোমরা। ঘরের লোককে অস্তত আজ একদিনের মতো ঘরছাড়া করো। ૨૨||૭ g