পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

?い রবীন্দ্র-রচনাবলী এখনো কোকিল ডাকছে, এখনো শিরীষবনের পুষ্পাঞ্জলি উঠছে ভরে ভরে, তবু এই চঞ্চলতার অন্তরে অন্তরে একটা বেদন শিউরিয়ে উঠল। বিদায়দিনের প্রথম হাওয়া অশথগাছের পাতায় পাতায় ঝর ঝর করে উঠছে। সভার বীণা বুঝি নীরব হবে, দিগন্তে পথের একতারার স্বর বাধা হচ্ছে— মনে হচ্ছে, যেন বসন্তী রঙ স্নান হয়ে গেরুয়া রঙে নামল । চলে যায়, মরি হায়, বসন্তের দিন । দূর শাখে পিক ডাকে বিরামবিহীন। অধীর সমীরভরে উচ্ছসি বকুল ঝরে, গন্ধসনে হল মন সুদূরে বিলীন । পুলকিত আম্ৰবীথি ফাঙ্কনেরই তাপে, মধুকরগুgরণে ছায়াতল কাপে । কেন জানি অকারণে সারাবেলা আনমনে পরানে বাজায় বীণা কে গে। উদাসীন ॥ বিদায় দিয়ো মোরে প্রসন্ন আলোকে, রাতের কালো আঁধার যেন নামে না ওই চোখে । হে সুন্দর, যে কবি তোমার অভিনন্দন করতে এসেছিল তার ছুটি মঞ্জুর হল। তার প্রণাম তুমি নাও। তার আপন গানের বন্ধনেই চিরদিন সে বঁাধ রইল তোমার দ্বারে। তার স্বরের রাখী তুমি গ্রহণ করেছ আমি জানি ; তার পরিচয় রইল তোমার ফুলে ফুলে, তোমার পদপাতকম্পিত খামল শল্পবীথিকায় । বসন্তে বসন্তে তোমার কবিরে দাও ডাক – যায় যদি সে যাক । রইল তাহার বাণী, রইল ভরা সুরে, রইবে না সে দূরে— হৃদয় তাহার কুঞ্জে তোমার রইবে না নির্বাকৃ।