পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

868 ब्ररोौञ्ज-ब्रफ़नांखलौ পাচ্ছ বাপু মাথার মধ্যে কিছুই থাকে না কেবল ছৰুদ্ধি আছে। বরঞ্চ নিজের মাথা ভাঙা ভালো, কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না।” পথিকৰয় শশব্যস্ত ও অপ্রতিভ হইয়া ঠাকুরকে প্রণাম করিল। বিশ্বন কহিলেন, “বাপু, তোমরা যে কথা বলছিলে সে কথাগুলো ভালো নয়।” . পথিকদ্বয় কহিল, "যে আজ্ঞে ঠাকুর, আর এমন কথা বলব না।” পুরোহিত ঠাকুরকে পথে ছেলেরা ঘিরিল । তিনি কহিলেন, “আজ বিকালে আমার ওখানে যাস, আমি আজ গল্প শোনাব।” আনন্দে ছেলেরা লাফালাফি চেচামেচি বাধাইয়া দিল । বিশ্বন ঠাকুর এক-এক দিন অপরাহ্লে রাজ্যের ছেলে জড়ো করিয়া তাহাদিগকে সহজ ভাষায় রামায়ণ, মহাভারত ও পৌরাণিক গল্প শুনাইতেন । মাঝে মাঝে দুই-একটি নীরস কথাও যথাসাধ্য রসসিক্ত করিয়া বলিবার চেষ্টা করিতেন, কিন্তু যখন দেখিতেন ছেলেদের মধ্যে হাই তোলা সংক্রামক হইয়া উঠিতেছে তখন তাহাদের মন্দিরের বাগানের মধ্যে ছাড়িয়া দিতেন । সেখানে ফলের গাছ অসংখ্য আছে। ছেলেগুলো আকাশভেদী চীৎকার-শবে বানরের মতো ডালে ডালে লুঠপাট বাধাইয়া দিত-বিৰন আমোদ দেখিতেন । বিৰন কোন দেশী লোক কেহ জানে না। ব্রাহ্মণ, কিন্তু উপবীত ত্যাগ করিয়াছেন। বলিদান প্রভৃতি বদ্ধ করিয়া এক প্রকার নূতন অনুষ্ঠানে দেবীর পূজা করিয়া থাকেন—প্রথম প্রথম তাহাতে লোকেরা সন্দেহ ও আপত্তি প্রকাশ করিয়াছিল, কিন্তু এখন সমস্ত সহিয়া গিয়াছে। বিশেষত বিৰনের কথায় সকলে বশ । বিশ্বন সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়া সকলের সঙ্গে আলাপ করেন, সকলের সংবাদ লন, এবং রোগীকে যাহা ঔষধ দেন তাহা আশ্চর্য থাটিয়া যায়। বিপদে আপদে সকলেই তাহার পরামর্শমতে কাজ করে—তিনি মধ্যবর্তী হইয়া কাহারও বিবাদ মিটাইয়া দিলে বা কিছুর মীমাংসা করিয়া দিলে তাহার উপর আর কেহ কথা কহে না । ত্রিংশ পরিচ্ছেদ এই বৎসরে ত্রিপুরায় এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটিল। উত্তর হইতে সহসা পালে পালে ইছর ত্রিপুরার শস্তক্ষেত্রে আসিয়া পড়িল। শস্ত সমস্ত নষ্ট করিয়া ফেলিল, এমন কি, কৃষকের ঘরে শস্ত যত কিছু সঞ্চিত ছিল তাহাও অধিকাংশ খাইয়া ফেলিল—রাজ্যে হাহাকার পড়িয়া গেল। দেখিতে দেখিতে দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হইল। বন হইতে ফল