পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬৫

S 8 O রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী সন্ধ্যা ক্ষান্ত হও, ধীরে কও কথা। ওরে মন, সন্ধ্যা আসে শান্তিময়ী । তিমিরের তীরে অসংখ্য-প্ৰদীপ-জ্বালা এ বিশ্বমন্দিরে এল আরতির বেলা । ওই শুন বাজে নিঃশব্দ গভীর মন্দ্ৰে অনন্তের মাঝে শঙ্খ ঘণ্টাধ্বনি । ধীরে নামাইয়া আনো বিদ্রোহের উচ্চকণ্ঠ পূরবীর স্নানমন্দ স্বরে। রাখে রাখো অভিযোগ তব, মৌন করো বাসনার নিত্য নব নব নিৰ্ম্মফল বিলাপ। হেরো মৌন নভস্তল, ছায়াচ্ছন্ন মৌন বন, মেীন জলস্থল স্তম্ভিত বিষাদে নম্র । নির্বক নীরব দাড়াইয়া সন্ধ্যাসতী— নিয়নপল্লব অনন্ত আকাশপূৰ্ণ অশ্রু-ছলছল করিয়া গোপন । বিষাদের মহাশান্তি ক্লান্ত ভুবনের ভালে করিছে একান্তে সাস্তুনা-পরিশ। আজি এই শুভক্ষণে, সন্ধ্যার আলোকে । বিন্দু দুই অশ্রুজলে দাও উপহার- অসীমের পদতলে জীবনের স্মৃতি। অন্তরের যত কথা করুক বিস্তার { সুপ্তপ্রায় গ্রাম। পক্ষীরা গিয়েছে নীড়ে, শিশুরা খেলে না ; শূন্য মাঠ জনহীন ; ঘরে-ফেরা শ্ৰান্ত গাভী গুটি দুই-তিন কুটির-অঙ্গনে বাধা, ছবির মতন স্তব্ধপ্ৰায় । গৃহকাৰ্য হল সমাপনকে ওই গ্রামের বধু ধরি বেড়াখানি সম্মুখে দেখিছে চাহি, ভাবিছে কী জানি ধূসর সন্ধ্যায়। অমনি নিস্তব্ধপ্ৰাণে বসুন্ধরা, দিবসের কর্ম-অবসানে,