> २२ রবীন্দ্র-রচনাবলী আপনাকে সে বাধা দিয়ে আমায় দেবে বাধন, সে কি আমনি হবে। আমাকে যে দুঃখ দিয়ে আনবে আপন বশে, সে কি আমনি হবে । তার আগে তার পাষাণ হিয়া গলবে করুণ রসে, সে কি আমনি হবে । আমাকে যে র্কাদাবে তার ভাগ্যে অাছে কঁাদন, সে কি আমনি হবে । ২ । বাবাঠাকুর, তোমার গায়ে যদি রাজা হাত দেন তা হলে কিন্তু আমরা সইতে পারব না । ধনঞ্জয় । আমার এই গা র্যার তিনি যদি সইতে পারেন বাবা, তবে তোমাদেরও সইবে। যেদিন থেকে জন্মেছি আমার এই গায়ে তিনি কত দুঃখই সইলেন– কত মার খেলেন, কত ধুলোই মাখলেন— হায় হায়— কে বলেছে তোমায় বঁধু, এত দুঃখ সইতে ? আপনি কেন এলে, বঁধু, আমার বোঝা বইতে ? প্রাণের বন্ধু, বুকের বন্ধু, সুখের বন্ধু, দুখের বন্ধু, তোমায় দেব না দুখ পাব না দুখ, হেরব তোমার প্রসন্ন মুখ, আমি সুখে দুঃখে পারব বন্ধু চিরানন্দে রইতে— তোমার সঙ্গে বিনা কথায় মনের কথা কইতে । ৩। বাবা, আমরা রাজাকে গিয়ে কী বলব ? ধনঞ্জয় । বলব, আমরা খাজনা দেব না। ৩। যদি শুধোয় কেন দিবি নে ? ধনঞ্জয় । বলব, ঘরের ছেলেমেয়েকে কঁাদিয়ে যদি তোমাকে টাকা দিই তা হলে আমাদের ঠাকুর কষ্ট পাবে। যে অন্নে প্রাণ বঁাচে সেই অন্নে ঠাকুরের ভোগ হয়, তিনি যে প্রাণের ঠাকুর। তার বেশি যখন ঘরে থাকে তখন তোমাকে দিই— কিন্তু ঠাকুরকে ফাকি দিয়ে তোমাকে খাজনা দিতে পারব না। ৪ । বাবা, এ কথা রাজা শুনবে না ।
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।