পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S qe রবীন্দ্র-রচনাবলী নাহয় গেল সবই ভেসে– রইবে তো সেই সর্বনেশে ! যে লাভ সকল ক্ষতির শেষে সে লাভ কেবল বাড়বে। সুখ নিয়ে ভাই ভয়ে থাকি, আছে অাছে দেয় সে ফাকি, দুঃথে যে সুখ থাকে বাবি কেই বা সে সুখ নাড়বে ? যে পড়েছে পড়ার শেষে ঠাই পেয়েছে তলায় এসে, ভয় মিটেছে বেঁচেছে সে— তারে কে আর পাড়বে ? উদয়াদিত্য। বৈরাগীঠাকুর, আমি তোমার সঙ্গ ধরলুম, আর ছাড়ছি নে কিন্তু । ধনঞ্জয়। তুমি ছাড়লে আমি ছাড়ি কই ভাই ? মনে বেশ আনন্দ আছে তো ? খুতমুত কিছু নেই তো ? উদয়াদিত্য। কিছু না— বেশ আছি। ধনঞ্জয়। তবে দাও একটু পায়ের ধুলো ! উদয়াদিত্য ও কী কর ! ও কী কর । অপরাধ হবে যে । ধনঞ্জয় । দাদা, এত বড়ো বোঝা নিজের হাতে ভগবান যার র্কাধ থেকে নামিয়ে দেন সে যে মহাপুরুষ । তোমাকে দেখে আজ আমার সর্ব গায়ে কাটা দিচ্ছে। একবার দিদিকে আনো— তাকে একবার দেখি । উদয়াদিত্য। সে তোমাকে দেখবার জন্যে ব্যাকুল হয়ে আছে— তাকে ডেকে আনছি। বিভার প্রবেশ ও বৈরাগীকে প্রণাম ধনঞ্জয় । ভয় নেই দিদি, ভয় নেই, কোনো ভয় নেই। এই দেখ না, আমাকে দেখ না— আমি তার রাস্তার ছেলে— রাস্তার কোলে-কোলেই দিন কেটে গেল, দিনরাত্রি একেবারে ধুলোয় ধুলোময় হয়ে বেড়াই, মায়ের আদরে লাল হয়ে উঠি । আমার মায়ের এই ধুলোঘরে আজ তোমার নতুন নিমন্ত্রণ– কিন্তু মনে কোনো ভয় রেখো না ।