পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যোগাযোগ ২৭১ মোতির মাকে একলা পেয়ে কুমু বললে, "দাদার কাছ থেকে টেলিগ্রাফের জবাব পেয়েছি।” মোতির মা কিছু আশ্চর্য হয়ে বললে, “কথন পেলে ?” কুমু বৰলে, “কাল রাত্তিরে।” “রাত্তিরে !” “ই, অনেক রাত। তখন উনি নিজে এসে আমার হাতে দিলেন।” মোতির মা বললে, “তা হলে চিঠিখানাও নিশ্চয় পেয়েছ।” “কোন फ़िठिं ?” “তোমার দাদার চিঠি ।” ব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, “না, আমি তো পাই নি । দাদার চিঠি এসেছে নাকি ?” মোতির মা চুপ করে রইল । . কুমু তার হাত চেপে ধরে উৎকণ্ঠিত হয়ে বললে, “কোথায় দাদার চিঠি, আমাকে ७cन लांG-ञां ।” মোতির মা চুপি চুপি বললে, “সে চিঠি আনতে পারব না, সে বড়োঠাকুরের বাইরের ঘরের দেরাজে আছে।”

  • আমার চিঠি কেন আমাকে এনে দিতে পারবে না ?”

“র্তার দেরাজ খুলেছি জানতে পারলে প্রলয়-কাণ্ড হবে।” কুমু অস্থির হয়ে বললে, “দাদার চিঠি তা হলে আমি পড়তে পাব না ?” “বড়োঠাকুর যখন আপিসে যাবেন তখন সে চিঠি পড়ে আবার দেরাজে রেখে দিয়ে৷ ” রাগ তো ঠেকিয়ে রাখা যায় না। মনটা গরম হয়ে উঠল। বললে, “নিজের চিঠিও কি চুরি করে পড়তে হবে ?” “কোনটা নিজের কোনটা নিজের নয়, সে বিচার এ বাড়ির কর্তা করে দেন।” কুমু তার পণ ভুলতে যাচ্ছিল, এমন সময় হঠাৎ মনের ভিতরটা তর্জনী তুলে বলে উঠল, রাগ কোরে না। ক্ষণকালের জন্তে কুমু চোখ বুজলে। নিঃশব্দ বাক্যে ঠোট দুটাে কেঁপে উঠল, ‘প্রিয় প্রিয়ায়াৰ্হসি দেব সোঢ়ম।” কুমু বললে, “আমার চিঠি কেউ যদি চুরি করেন করুন, আমি তাই বলে চুরি করে চুরির শোধ দিতে চাই নে।” বলেই কুমুর তখনই মনে হল কথাটা কঠিন হয়েছে। বুঝতে পারলে, ভিতরে ষে রাগ আছে নিজের অগোচরে সে আপনাকে প্রকাশ করে। তাকে উন্মুলিত