পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 S8 রবীন্দ্র-রচনাবলী কবি যে মন ‘হু হু’ করার কথা লিখিয়াছেন তাহা কী প্রকৃতির বলিতে পারি না। কিন্তু এই বর্ণনা পাঠ করিয়া বহির্জগতের জন্য একটি বালক-পাঠকের মন হু হু করিয়া উঠিত। ঝরনার ধারে জলশীকরসিক্ত স্নিগ্ধখ্যামল দীর্ঘকোমল ঘনঘাসের মধ্যে দেহ নিমগ্ন করিয়া নিস্তব্ধভাবে জলকলধ্বনি শুনিতে পাওয়া একটি পরম আকাজক্ষার বিষয় বলিয়া মনে হইত ; এবং যদিও জ্ঞানে জানি যে, কুরঙ্গিণীগণ কবির দুঃখে অশ্রুপাত করিতে আসে না এবং সাধ্যমতে কবির আলিঙ্গনে ধরা দিতে চাহে না, তথাপি এই নিঝরপাশ্বে ঘনশম্পতটে মানবের বাছপাশবদ্ধ মুগ্ধ কুরঙ্গিণীর দৃশ্ব অপরূপ সৌন্দর্যে হৃদয়ে সম্ভববৎ চিত্রিত হইয়া উঠিত। কিন্তু ভাবি পল্লীগ্রামে যাই, নামধাম সকল লুকাই। চাষীদের মাঝে রয়ে চাষীদের মতো হয়ে চাষীদের সঙ্গেতে বেড়াই। প্রাতঃকালে মাঠের উপর, শুদ্ধ বায়ু বহে ঝর ঝর, চারি দিক মনোরম, আমোদে করিব শ্রম ; স্বস্থ স্ফূর্ত হবে কলেবর। বাজাইয়ে বঁাশের বঁাশরি সাদা সোজা গ্রাম্য গান ধরি সরল চাষার সনে প্রমোদ-প্রফুল্ল মনে কাটাইব আনন্দে শর্বরী। বরষার যে ঘোরা নিশায় সৌদামিনী মাতিয়ে বেড়ায়— ভীষণ বজের নাদ, ভেঙে যেন পড়ে ছাদ, বাবু সব কাপেন কোঠায়— সে নিশায় আমি ক্ষেত্রতীরে নড়বোড়ে পাতার কুটিরে