পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আধুনিক সাহিত্য 8 > 。 ‘সুঠাম শরীর পেলব লতিক আনত সুষমা কুসুম ভরে, চাচর চিকুর নীরদ মালিকা লুটায়ে পড়েছে ধরণী-পরে।’ এ ছন্দ নারীবর্ণনার উপযুক্ত বটে— ইহাতে তালে তালে নূপুর ঝংকৃত হইয় উঠে। কিন্তু এ ছন্দের প্রধান অসুবিধা এই যে, ইহাতে যুক্ত অক্ষরের স্থান নাই। পয়ার ত্রিপদী প্রভৃতি ছন্দে লেখকের এবং পাঠকের অনেকটা স্বাধীনতা আছে। অক্ষরের মাত্রাগুলিকে কিয়ং পরিমাণে ইচ্ছামত বাড়াইবার কমাইবার অবকাশ আছে। প্রত্যেক অক্ষরকে একমাত্রার স্বরূপ গণ্য করিয়া একেবারে এক নিশ্বাসে পড়িয়া যাইবার আবশ্বক হয় না। দৃষ্টাস্তের দ্বারা আমার কথা স্পষ্ট হইবে।– ‘হে সারদে দাও দেখা । বাচিতে পারি নে এক, কাতর হয়েছে প্রাণ, কাতর হৃদয় । কী বলেছি অভিমানে শুনো না শুনো না কানে, বেদন দিয়ে না প্রাণে ব্যথার সময় ।” ইহার মধ্যে প্রায় যুক্ত অক্ষর নাই। নিম্নলিখিত শ্লোকে অনেকগুলি যুক্তাক্ষর আছে, অথচ উভয় শ্লোকই মুখপাঠ্য এবং শ্রুতিমধুর। পদে পৃথ্বী, শিরে ব্যোম, তুচ্ছ তার স্বর্য সোম, নক্ষত্র নখগ্রে যেন গনিবারে পারে, সম্মুখে সাগরাস্বর ছড়িয়ে রয়েছে ধরা, কটাক্ষে কখন যেন দেখিছে তাহারে।’ এই দুটি শ্লোকই কবির রচিত ‘সারদামঙ্গল’ হইতে উদ্ধৃত। এক্ষণে বঙ্গসুন্দরী’ হইতে দুইটি শ্লোক উদ্ধৃত করিয়া তুলনা করা যাক । 'একদিন দেব তরুণ তপন হেরিলেন সুরনদীর জলে অপরূপ এক কুমারী রতন খেলা করে নীল নলিনীদলে |’