পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আধুনিক সাহিত্য 8Գs ছেলে দুটো মানুষ হচ্ছে তো ?” ঘোষজ উত্তর করিলেন– “আজ্ঞে দুটো আর কই ? এখন তো একটি, কেবল বড়োটিই আছে।” প্রশ্নকর্তা বিস্মিত হইয়া কহিলেন— “সে ছেলেটির কী হল ?” ঘোষজ উত্তর করিলেন– “আজ্ঞে গোবিন্দ সেটিকে নিয়েছেন।”. তিনি সাধ করিয়া নাতি নাতনীদের নাম রাখিয়াছিলেন । পুত্রের সর্বজ্যেষ্ঠা কন্যা হইলে তাহার নাম রাধারানী রাখিলেন... সর্বজ্যেষ্ঠ রাধারানী তাহার প্রথম আদরের ধন ছিল। “রাধে। রাজনন্দিনী। গরবিনী। স্যামসোহাগিনী।” বলিয়া যখন ডাকিতেন, তখন এক বৎসরের বালিকা রাধারানী অচিরোদগত-দস্তাবলীশোভিত মুখচন্দ্রে একটু হাসিয়া, বাপাইয় তাহার ক্রোড়ে গিয়া পড়িত। তাহাকে বুকে চাপিয়া ধরিয়া বলিতেন— “রাখালের সনে প্রেম করিস নে রাই ।” অমনি চক্ষে জলধারা বহিত । এ দিকে শিশুকন্যা টিমিমণি, নবীনের সহিত র্তাহার ভ্রাতৃবধূর সম্বন্ধ, নবীনের ནཱ[༅། ལ།── এগুলিও লেখক বড়ো সরল এবং সরস সুমিষ্টভাবে ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। লেখক ধারাবাহিক গল্পের প্রতি বড়ো-একটা দৃষ্টিপাত করেন নাই— আমরাও গল্পের জন্য বিশেষ লালায়িত নহি । আমরা একজন রীতিমত মকুষ্যের আনন্দজনক বিশ্বাসজনক জীবনবৃত্তান্ত চাহি– নশিপুর গ্রামে তর্কভূষণ-পরিবারের আদ্যোপাস্ত বিবরণ শুনিয়া যাইতে আমাদের কিছুমাত্র শ্রান্তিবোধ হইত না ; কারণ, তর্কভূষণ আমাদের হৃদয় আকর্ষণ করিয়াছেন এবং লেখকও তাহার সূক্ষ্মদৰ্শিনী হাস্তবর্ষিণী কল্পনাশক্তি দ্বারা আমাদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস আকর্ষণ করিতে পারিয়াছেন। কিন্তু লেখক দুইখানি বহির পাতা পরস্পর উলটাপালটা করিয়া দিয়া একসঙ্গে বাধাইয়। দপ্তরির অন্ন মারিয়াছেন এবং পাঠকদিগের রসভঙ্গ করিয়াছেন, এ আক্ষেপ আমরা কিছুতেই ভুলিতে পারিব না। চৈত্র >\o o X