পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫২৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী ‘নবীন লেখকের মনটাকে টহলায় বেশি কিন্তু খোরাক অতি অল্পই দেয়।’ ‘কাচ যেমন, হয় দৃষ্টিকে সাহায্য করে নয় ঝাপসা করিয়া দেয়, কথা জিনিসটিও তেমনি ।” ‘একপ্রকারের কেতাবি স্টাইল আছে যাহার মধ্যে কাগজেরই গন্ধ পাওয়া যায়, বিশ্বসংসারের গন্ধ নাই ; পদার্থের তত্ত্ব যাহার মধ্যে দুর্লভ, আছে কেবল লেখকিয়ানা।’ বই জিনিসটা ভাব- প্রকাশ ও রক্ষার একটা অাধারমাত্র। কিন্তু অনেক সময় সেই নিজে সর্বেসর্বা হইয়া উঠে । তখন সে বই পড়িয়া মনে হয় এ কেবল বই পড়িতেছি মাত্র, এগুলা কেবল লেখা। ভালো বই পড়িবার সময় মনে থাকে না বই পড়িতেছি ; ভাব এবং তত্বের সহিত মুখামুখি পরিচয় হয়, মধ্যস্থ পদার্থ টা চোখেই পড়ে না। ‘অনেক লেখক আপনার স্টাইলটাকে ঝম্ ঝম্ করিয়া বাজাইতে থাকে, লোককে জানাইতে চায় তাহার কাছে সোনা আছে বটে।’ ‘দুর্লভ আশাতীত স্টাইল ভালো, যদি জোটে, কিন্তু আমি পছন্দ করি যে স্টাইলটিকে ঠিক প্রত্যাশা করা যায়।’ (l এ কথাটির মধ্যে গভীরতা আছে। অভাবনীয় আশাতিরিক্ত সৌন্দর্যকে ভালে৷ বলিতেই হইবে, তথাপি তাহ মনের ভারস্বরূপ, তাহাতে শ্রান্তি আনে। কিন্তু যেখানে যেটি আশা করা যায় ঠিক সেইটি পাইলেই মন শাস্তি ও স্বাস্থ্য অনুভব করে, তাহাকে বিস্ময় বা মুখের ধাক্কায় বারম্বার আহত করিয়া ক্ষুব্ধ করে না। বাংলায় যে বচন আছে, ‘সুখের চেয়ে স্বস্তি ভালো? তাহারও এই অর্থ। স্বস্তির মধ্যে যে শান্তি ও গভীরতা, ব্যাপ্তি ও ধ্রুবত্ব আছে, সুখের মধ্যে তাহ নাই। এইজন্য বলা যাইতে পারে মুখ ভালো বটে কিন্তু স্বস্তি তাহার চেয়েও প্রার্থনীয়। বৈশাখ >Wうo ゲ