পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እbrO 帖 রবীন্দ্র-রচনাবলী ডাক্তার। শুধু বােনপো কেন। বউয়ের প্রতিও তো একটা কর্তব্য আছে। নিজের মন দিয়েই ভেবে দেখুন-না, তার মনটা কী রকম হচ্ছে। বেচারা নিশ্চয়ই ঘরে আসবার জন্যে ছটফট করে সারা হল। মাসি । বিবেচনাশক্তি কম, অতটা ভেবে দেখি নি তো । ডাক্তার। দেখুন, আমি ঠোঁটকােটা মানুষ, উচিত কথা বলতে আমার মুখে বাধে না । কিছু মনে করবেন। कीं । মাসি । মনে করব কেন, ডাক্তার। অন্যায় কোথাও থাকে। যদি, নিন্দে না হলে তার শোধন হবে কী করে । তা তোমার কথা মনে রইল, কোনাে ত্রুটি হবে না।-- [ডাক্তারের প্রস্থান হিমি, কী করছিস । হিমি। দাদার জন্যে দুধ গরম করছি। মাসি। আচ্ছা, দুধ আমি গরম করব। তুই যা, যতীনকে একটু গান শোনাগে যা। তোর গান শুনতে শুনতে ওর চোখে তবু একটু ঘুম আসে। প্রতিবেশিনীর প্রবেশ প্রতিবেশিনী । দিদি, যতীন কেমন আছে আজ। মাসি। ভালো নেই, সুরো । প্রতিবেশিনী | আমার কথা শোনো, দিদি ৷ একবার আমাদের জগু ডাক্তারকে দেখাও দেখি । আমার নাতনি নাক ফুলে ব্যথা হয়ে যায় আর-কি। শেষকালে জগু ডাক্তার এসে তার ডান নাকের ভিতর থেকে এতবড়ো একটা কঁচের পুঁতি বের করে দিলে। ওর ভারি হাতযশ। আমার ছেলে তার ঠিকানা জানে। মাসি। আচ্ছা, বোলো ঠিকানাটা পাঠিয়ে দিতে । প্রতিবেশিনী। সেদিন তোমাদের বউকে আলিপুরে জু-তে দেখলুম। যে। মাসি ৷৷ ও জন্তু-জানোয়ার ভারি ভালোবাসে, প্রায় সেখানে যায়। প্রতিবেশিনী। জন্তু ভালোবাসে বলে কি স্বামীকে ভালোবাসতে নেই। মাসি। কে বললে, ভালোবাসে না ! ছেলেমানুষ, দিনরাত রুগীর কাছে থাকলে বাঁচবে কেন । আমরাই (IOS G36K5 (GFK KK প্রতিবেশিনী। তা যাই বল, পাড়াসুদ্ধ মেয়েরা সবাই কিন্তু ওর কথা— মাসি। পাড়ার মেয়েরা তো ওকে বিয়ে করে নি, সুরো। আমার যতীন ওকে বােঝে, সে তো কোনোদিন-- প্রতিবেশিনী। তা দিদি, সে কিছু বলে না বলেই কিমাসি। শুধু বলে না ? ও-যে কখনো জাদুঘরে কখনাে-বাবাঘভালুক দেখতে যায়, এতেই তার আনন্দ । প্রতিবেশিনী। বল কী দিদি । সেবােটা কি তার চেয়েমাসি। ও তো বলে মণির পক্ষে এইটেই সেবা। যতীন নিজে বিছানায় বদ্ধ থাকে, মণি ঘুরে বেড়িয়ে এলে সেইটােতেই যতীন যেন ছুটি পায়। রুগীর পক্ষে সে কি কম। প্রতিবেশিনী। কী জানি ভাই, আমরা সেকেলে মানুষ, ও সব বুঝতে পারি নে। তা যা হােক, আমার ছেলেকে পাঠিয়ে দেব, দিদি। সে জগু ডাক্তারের ঠিকানা জানে। একবার তাকে ডেকে দেখাতে দোষ কী । [প্ৰস্থান রোগীর ঘরে । যতীন। এই যে, হিমি এসেছিস। আঃ বাঁচলুম। সেই ফোটােটা কোথাও খুঁজে পাচ্ছি নে, তুই একবার দেখ-না, বোন | হিম। কোন ফোটাে, দাদা।